তথ্যমন্ত্রী তথ্যের ভাণ্ডার: গয়েশ্বর
১১ আগস্ট ২০২১ ১৯:৩৬ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২১ ২১:০৩
কেরানীগঞ্জ: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেছেন, ‘সরকার প্রতিদিন টেলিভিশনে নানা কথা বলে। নানা কথা বলে ওরা খুব তৃপ্তি পায়। বিশেষ করে তথ্যমন্ত্রী তো তথ্যের ভান্ডার। ভবিষ্যতে তাকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সরকারের ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতির অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।
বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে দলের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় এই মন্তব্য করেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জ দক্ষিন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে উপজেলায় করোনা হেল্প সেন্টার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে সরকার ‘ভেল্টিশনে’ আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে কী আন্দোলন করবেন? এই সরকারকে কী বা ধমক দেবেন? আমি আগেই বলছি, এই সরকার ভেন্টিলেশনে আছে। এই ভেন্টিলেশন খুলে গেলে সরকার নাই হয়ে যাবে। ওরা আতঙ্কে আছে, সারাক্ষণ ওদের হারাবার যন্ত্রণা, ওদের প্রাপ্তির কোনো বিষয় নাই।’
গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশে যে পরিমাণ টাকা লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে মজুদ হয়েছে, এই আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা যেই টাকা লুটপাট করেছে, তার এক শ’ ভাগের পাঁচ ভাগ টাকা খরচ করলে ভ্যাকসিনের সমস্যা হয় না, মানুষকে না খেয়ে থাকতে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘টেলিভিশন-পত্রিকার পাতায় মিথ্যা কথা লিখলে জনগণ কি এটা সত্য ভাবে? জনগণ সরাসরি আক্রান্ত। সেই আক্রান্তের কথা না বলে যদি বলা হয়, জনগণ নিরাপদ। তাহলে এতে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। একটা সময় আসবে এই মিডিয়া কিন্তু জনগণ দেখবে না, পত্রিকা পড়বে না।’
‘আমি জানি, দেশের ৮০ ভাগ যুবক-কিশোর এবং মাঝ বয়সী মানুষ বাংলাদেশের চ্যানেল খোলে না। ইন্ডিয়ান চ্যানেল দেখে, স্টার জলসা দেখে, স্টার প্লাস দেখে, স্টার মুভি দেখে। কেন দেখে? কারণ, ওখানে বিনোদন আছে, বিনোদন দেখে। আর আমাদের এখাকার বিনোদন হলো মিথ্যা কথার বিনোদন। মিথ্যা কথা শুনে সুস্থ লোকও অসুস্থ হয়ে যায়’- বলেন গয়েশ্বরচন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে মিডিয়া-পত্রিকা বড় বড় বিষয় রেখে কখনো পরীমনি, কখনো খুকু মনি- এসব নিয়ে বাজার মাত করে। এগুলো তো পাবলিকের সাবজেক্ট না। আর যেসব কথা পরীমনিরা বলে, এসব কথা প্রকাশ পেলে এরা (ক্ষমতাসীনরা) তো বোরকা পরার সময় পাবে না।’
গয়েশ্বরচন্দ্র বলেন, ‘এগুলো রাজায় রাজায় দ্বন্দ্ব, ভৃত্যে ভৃত্যে দ্বন্দ্ব। তাদের দ্বন্দ্বের ফাঁক দিয়ে পরীমনিরা বের হয়ে মাঝে-মধ্যে মিডিয়ার মাধ্যমে বাজার মাত করে। কিন্তু ওটা আমার পেটের খোরাক দেবে না, আমার রাজনীতির খোরাকও দেবে না।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত রোগীরা আধুনিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। কিছু বেসরকারি হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসা সেবা থাকলেও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নাই। মফস্বলের অবস্থা আরও ভয়াবহ। না আছে ঔষধ, না আছে ডাক্তার।’
তিনি বলেন, ‘যেখানে গড়ে প্রতিদিন আড়াই শ’ জনের বেশি লোক মারা যাচ্ছে সেখানে একবার লকডাউন দেয়, আরেকবার উঠিয়ে নেয়। আজকে মানুষের জীবনকে তারা বিপন্ন করে দিয়েছে। জনগণের প্রতি তাদের ন্যুনতম দায়বদ্ধতা নেই।’
কেরানীগঞ্জ বিএনপির সভানেত্রী অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক আলী বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন মাস্টার প্রমুখ।
সারাবাংলা/একেএম/এজেড