‘পরীমনি ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে কোনো ভয় নাই’
১০ আগস্ট ২০২১ ২০:৫৭ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২১ ০০:১৩
ঢাকা: ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ গ্রেফতার হওয়া কথিত মডেলদের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ ফাঁসের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় অনেকে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। পরীমনি ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে কারও কোনো ভয় নাই।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
একটি চক্র পরীমনি ইস্যুতে সমাজের বিশিষ্টজনদের কাছে ফোন করে চাঁদা দাবি করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই এ ভয়ে ভীত হয়ে বাড়িতে থাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। পুলিশের কাছে তারা জানতে চাচ্ছেন- আমরা কি বাড়িতে থাকব? আমি জিজ্ঞেস করেছি- কেন? তারা বলছেন, আমাকে তো অমুক মিডিয়া থেকে ফোন করে বলেছে পরীমনি নাকি রিমান্ডে আমার নাম বলেছে, পিয়াসা আমার নাম বলেছে। আমি তাদের বলেছি, ভাই আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী? কোনো মামলা হয়েছে? অভিযোগ না থাকলে কোনো ভয় নাই। তখন তারা বলেন, কখন কে কি করে বসে তা তো জানি না।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, একাধিক ব্যক্তি আমাদের কাছে এবং মন্ত্রী মহোদয়ের (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) কাছে জানিয়েছেন, মডেল ইস্যুতে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিদের তালিকার কথা বলে তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে, আপনি যদি এই পরিমাণ অর্থ না দেন, তাহলে আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তা দিয়ে নিউজ করে দেবো।
এসব নিউজ করে হয়তো তাদের সামাজিকভাবে হেনস্তা করা যাবে কিন্তু আইনগতভাবে তারা কোনো অপরাধ করেছেন বলে আমি মনে করি না-বলেন ডিএমপি কমিশনার।
যাদের ফোন দিয়ে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে তারা মামলা করছেন না কেন? এমন প্রশ্নে কমিশনার বলেন, তারা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় আছেন বলেই মামলা করতে চাচ্ছেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি পরীমনি বলে আমাকে সিনেমার নায়িকা বানানোর কথা বলে অমুক ব্যক্তি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে, সেটি একটি মামলার বিষয় হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি আসামি হতে পারে অথবা ওই ব্যক্তি যদি বলে পরীমনি আমাকে ফাঁদে ফেলে আমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন কোনো অভিযোগ কি পরীমনির পক্ষ থেকে করা হয়েছে? অথবা ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে? কোনোটিই করা হয়নি। তো পুলিশ কেন তালিকা করবে? পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কোনো তালিকা তৈরি হচ্ছে না।
সিআইডি থেকে সাংবাদিকদের বলা হচ্ছে, ব্ল্যাকমেইলের বিষয়ে তারা (সিআইডি) বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছে। এমন প্রশ্নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তারা যদি অভিযোগ পেয়ে থাকে তাহলে তাদের অনুরোধ করব থানায় মামলা করুক। মামলা তো সিআইডিতে হবে না, মামলা থানায় অথবা আদালতে হবে। মামলা হওয়ার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। আমি নিজেও সিআইডি প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। সিআইডি প্রধান বলেছেন, এ ধরনের তালিকা তৈরি করা অথবা কাউকে আটক করার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই এবং এ ধরনের কোনো কাজ পুলিশের কোনো সংস্থা করছে না। কোনো তালিকা তৈরি করা অথবা আটক করা হবে ধরনের কোনো কাজ করছে না পুলিশ।
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও বলেন, পরীমনির বাসায় যে মাদক পাওয়া গেছে এক্ষেত্রে পরীমনি বলেছেন তার কাছে লাইসেন্স আছে। লাইসেন্স থাকলেও তার কাছে কতটুকু মদ ছিল, লাইসেন্স অনুযায়ী সে কতটুকু মদ নিতে পারেন, এসবের বৈধতা আছে কি-না এগুলো তদন্ত করে ওই মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ডিবি কর্মকর্তা সাকলায়েনের সাথে পরীমনির প্রেমের সম্পর্কের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিব্রত। এই অভিযোগ গণমাধ্যমে চলে আসার পর সাকলায়েনকে ডিবি থেকে সরিয়ে পিওএম পশ্চিমে দেওয়া হয়েছে। তার ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/ইউজে/এসএসএ