১২ দিনেও বাবা-মায়ের সন্ধান পায়নি শিশু সজীব
৯ আগস্ট ২০২১ ১৮:৫১
ঢাকা: রাজধানীর সূত্রাপুর থানাধীন এলকায় মুসলিম হোটেলের সামনে শিশু সজীবকে একা দেখতে পেয়ে সাকিব নামে এক পথচারী তাকে থানায় দিয়ে আসেন। এরপর থেকে নানা জায়গায় সন্ধান করেও সজিবের স্বজনদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। সজিব স্পষ্ট করে কোনো ঠিকানাও বলতে পারছে না।
রাজধানীর কোনো এক মাজারের পাশেই তারা বসবাস করত। গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ। বাবার নাম বাবুল আর মায়ের না চম্পা। এটুকুই সে বলতে পারে। আর কিছু বলতে পারছে না। ১২ দিন পার হলেও এখনও সে পায়নি মা-বাবার সন্ধান।
সূত্রাপুর থানার মাধ্যমে তেজগাঁও ভিকটিম সেন্টার, আনোয়ারা শিশুপল্লী সেন্টার ঘুরে তার ঠিকানা এখন মিরপুরের শিশু আশ্রয়ন কেন্দ্রে ঠাঁই মিলছে সজীবের। স্বজনদের খুঁজে না পাওয়ায় তেজগাঁও ভিকটিম সেন্টার, আনোয়ারা শিশুপল্লী সেন্টার সজীবকে আর রাখতে চাইনি।
এ জন্য সোমবার (৯ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করে সরকারি যে কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে তাকে রাখার আবেদন করেন সূত্রাপুর থানার এসআই রজমান হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক সজিবকে মিরপুর-১ এর সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত শিশু আশ্রয়ণ কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দেন।
আদেশে বলা হয়— শিশুটির কোনো আইনত অভিভাবককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাকে মিরপুর-১ এর সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত শিশু আশ্রয়ন কেন্দ্রে প্রতিপালনের নির্দেশ দেওয়া হলো। তার কোনো আইনানুগ অভিভাবক পাওয়া গেলে যাচাই ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রত্যায়ন রেখে দাবিদার অভিভাবকের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, শিশুটি নিজের নাম, বাবা আর মায়ের নাম আর বাড়ি মানিকগঞ্জ ছাড়া আর কিছুই বলতে পারে না। ঢাকায় বাসা কোথায় তাও বলতে পারে না। শুধু বলে ঢাকায় কোনো এক মাজারের পাশে তারা থাকে।
জানা গেছে, সূত্রাপুর থানাধীন মুসলিম হোটেলের সামনে গত ২৯ জুলাই ভোর চারটার দিকে শিশু সজীবকে দেখতে পেয়ে সাকিব নামে এক পথচারী তাকে থানায় নিয়ে আসে। পরে সজীবের দেখানো মতে সম্ভাব্য এলাকায় খোঁজ করেও আত্মীয়-স্বজনকে পায়নি পুলিশ। ওইদিন তাকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে সজীবকে অন্যত্র নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়। পরবর্তীতে ৪ আগস্ট ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বেসরকারি সংস্থা ইসাবেলা আনোয়ারা শিশুপল্লী সেন্টার, পথশিশু আশ্রয়কেন্দ্র সদরঘাট স্যোশাল সার্ভিস সেন্টারে তাকে রাখা হয়।
সূত্রাপুর থানার মো. এসআই রমজান হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক পথচারী শিশু সজিবকে থানায় নিয়ে আসে। এরপর ওই শিশু কথা মতে স্বজনদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হয়। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তার নিখোঁজের বিষয়ে কোনো জিডি হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও থানা থেকে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।’
সারাবাংলা/এআই/একে