করোনা মহামারির শেষ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা
৯ আগস্ট ২০২১ ০৮:৪৪ | আপডেট: ৯ আগস্ট ২০২১ ০৮:৪৯
নভেল করোনাভাইরাস ঘটিত বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঢেউয়ের পর ঢেউ মোকাবিলা করতে করতে দৈনন্দিন জীবনের সবকিছুই বদলে গেছে। স্কুল-অফিস-স্বাস্থ্যসেবা-ছুটিরদিন-করমর্দন কিছুই আর আগের নিয়মে চলছে না।
তবে, আসছে বসন্তেই এই বৈশ্বিক মহামারির শেষ দেখছেন ব্রিটেনের শীর্ষ জিনতত্ত্ব বিশারদরা।
তারা বলছেন, অচিরেই নভেল করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের স্বাভাবিক এক জটিলতায় রূপ নিয়ে এরকম আরও দুই শতাধিক ভাইরাসের কাতারে স্থান করে নেবে।
এর মধ্যেই স্কটল্যান্ড করোনা মোকাবিলায় আরোপিত অবশিষ্ট বিধিনিষেধগুলো তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে কী এই বৈশ্বিক মহামারি শেষ হতে চলেছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন দ্য নাইনের চিফ নিউজ করেসপন্ডেন্ট জেমস কুক।
এ ব্যাপারে লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের জিনতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফ্রাঙ্কোইস ব্যালুক্স বলছেন, করোনা মহামারি শেষের খুব কাছাকাছি।
আসছে শীতে ইউরোপজুড়ে করোনার প্রকোপ কিছুটা বাড়লেও; ভ্যাকসিন প্রয়োগে এগিয়ে থাকা দেশগুলোতে আগামী বসন্ত আসতে আসতে মহামারির অবসান ঘটবে বলে আশাবাদী তিনি।
এর আগের শীতে করোনার ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের খবর দিয়ে যেভাবে বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছিল যুক্তরাজ্য, একইভাবে করোনামুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাময় দেশগুলোর তালিকায়ও দেশটি শীর্ষ তিনে রয়েছে। করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সুরক্ষিত দেশগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে কানাডা এবং স্পেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্কটল্যান্ডে দৈনিক গড়ে ৬৫ প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু, জুনের মধ্যেই সেখানকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। গ্রীষ্মে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের হার জানুয়ারির সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেলেও দৈনিক গড় মৃত্যু ১০ এর নিচে নেমে এসেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক স্কটিশদের প্রতি ১০ জনে ৯ জন করোনা ভ্যাকসিনের একডোজ হলেও নিয়েছেন। আর প্রতি ১০ জনে ৭ জন নিয়েছেন ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ। যুক্তরাজ্যেও ভ্যাকসিন কার্যক্রমের একইরকম চিত্র।
তবে কি হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করে ফেলার কারণে এমন ফলাফল? ভ্যাকসিন নিয়ে কিংবা করোনা আক্রান্ত হয়ে মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার সুফলই কি পাওয়া যাচ্ছে?
এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন টেক্সাস ইউনিভার্সিটির কোভিড-১৯ মডেলিং কনসোর্টিয়ামের পরিচালক লরেন অ্যাঙ্কেল মেয়ার্স।
তিনি দ্য নাইনকে বলেছেন, হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা প্রায় অসম্ভব। কারণ, করোনার দ্রুত সংক্রমণক্ষম ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট। দুনিয়ার ৮৫ ভাগ মানুষের ওই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপদের ব্যাপার হলো, তাদের অনেকেই আবার ভ্যাকসিনের আওতায় আসেনি।
এছাড়াও, ভ্যাকসিন নিয়েছেন এরকম অনেকেই ‘ব্রেকথ্রু’ সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন এবং অন্যান্যদের মধ্যে নতুন করে ভাইরাস ছড়িয়েছেন।
অধ্যাপক মেয়ার্স বলেন, মানুষের পক্ষে এমন কোনো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব নয় যার মাধ্যমে করোনা চিরতরে বিলুপ্ত হবে।
তার সঙ্গে একমত পোষণ করে অধ্যাপক ব্যালুক্স বলেন, করোনা মহামারি দশা থেকে পরিবর্তীত হয়ে স্বাভাবিক শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা হিসেবে থেকে যাবে।
সারাবাংলা/একেএম