Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চুরি ঠেকাতে বজ্রপাতে নিহত ১৬ জনের কবরে সিমেন্ট ঢালাই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৭ আগস্ট ২০২১ ১০:৩৮ | আপডেট: ৭ আগস্ট ২০২১ ১২:৩০

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: লাশ চুরি ঠেকাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে বাড়ির উঠানে। সেই সঙ্গে প্রতিটি কবরে দেওয়া হয়েছে সিমেন্টের ঢালাই।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের নিহত ১৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের কবরেই ঢালাই দেওয়া হয়েছে। নিহত তবজুলের জামাই মোহাম্মদ আলী এ খবর জানিয়েছেন।

এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বজ্রপাতের পর রাতেই এক পরিবারের নিহত ছয়জনকে বাড়ির উঠানে দাফন করা হয়। বাড়ির মালিক তোবজুল হক, তার স্ত্রী জামিলা বেগম, মেয়ে লাচন, ছেলে বাবুল, সাদিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী টকিয়ারা বেগমকে পাশাপাশি দাফন করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের সূর্যনারায়ণপুর গ্রামে নিহতদের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি কবরের সারি ঘিরে খননের কাজ চলছে। পরে বিকেলে এই ছয়টি কবর ঢালাই করা হয়।

বজ্রপাতে নিহত তবজুলের জামাই মোহাম্মদ আলী বলেন, শুনেছি বজ্রপাতে নিহতদের লাশ কবর থেকে চুরি করে নেওয়া হয়। এখানে আমার শশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের ছয় সদস্যকে দাফন করা হয়েছে। বাড়ির সামনে কবর দেওয়ার পরেও স্বজনদের মাঝে ভয় কাজ করছিল। তাই কবরের উপরেই সিমেন্টের ঢালাই করেছি। কবর ঘিরে ৩ ফিট ইটের গাঁথুনি দিয়ে তার উপরে ঢালাই করা হয়েছে।

বজ্রপাতের কবল থেকে বেঁচে ফেরা বরযাত্রী বৃদ্ধ মোফাজ্জল হোসেন জানান, বাড়ির সামনেই বরের বাবার লাশ দাফন করা হয়েছে। বরের নানা বাড়ির সামনে ছয়টি কবরের মতো এখানেও শুক্রবার বিকেলে ঢালাই কাজ চলছে। বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে ঢালাইয়ের কাজ শেষপর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

নিহত তবজুলের প্রতিবেশী তসিকুল ইসলাম বলেন, তাদের পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই মারা গেছেন। এলাকার লোকজন কবর খনন, দাফন কাজ ও কবরে সিমেন্ট ঢালাইয়ের কাজ করে। মৃতদেহগুলো সুরক্ষিত রাখতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিহতের স্বজনরা দাফনের পর বুধবার বৃষ্টিতে ভিজে সারারাত কবরের পাশে পাহারায় ছিল বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য আজিজুর রহমান আজিম বলেন, সজিবের ছাড়া বাকি সবগুলো কবরের উপর সিমেন্টের ঢালাই করা হয়েছে। আগামীকাল সেটিও ঢালাই করা হবে। সবগুলো লাশ বাড়ির উঠানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে এই গ্রামে বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির লাশ চুরি হয়েছে। তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বজ্রপাতে নিহত ১৭ জন হলেন- সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ঘাটাপাড়ার সাত্তার আলীর ছেলে সহবুল (৩০), চর সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের টিপুর স্ত্রী বেলী বেগম (৩২), মহরাজনগর ডানপাড়ার জামালের ছেলে লেচন (৫০), রফিকুল ইসলামের ছেলে বাবলু (২৬), একই গ্রামের মৃত সৈয়ব আলীর ছেলে তবজুল (৭০), তবজুলের স্ত্রী জমিলা (৫৮), ছেলে সাদল (৩৫), তেররশিয়া দক্ষিণপাড়ার মৃত মহবুলের ছেলে রফিকুল (৬০), সূর্যনারায়ণপুরের ধুনু মিয়ার ছেলে সজিব (২২), একই গ্রামের সাহালালের স্ত্রী মৌসুমী (২৫), বাবুডাইংয়ের মকবুলের ছেলে টিপু (৪৫), কালুর ছেলে আলম (৪০), মোস্তফার ছেলে পাতু (৪০), সুন্দরপুরের সেরাজুলের ছেলে আতিকুল ইসলাম ডাকু (২৪), ফাটাপাড়ার সাদিকুলের স্ত্রী টকিয়ারা বেগম (৩০) ও জনতার হাট গ্রামের শাহালাল ওরফে বাবুর ছেলে তামিম (৫) ও নৌকার মাঝি শিবগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাঁকা গ্রামের রফিকুল ইসলাম।

বুধবার দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিন পাঁকা ঘাটে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। এ সময় বরপক্ষের ১৬ জনসহ স্থানীয় এক মাঝি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। বরপক্ষের মোট ৪৭ জন সদস্য নিয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে কনের বাড়িতে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএম

টপ নিউজ বজ্রপাত

বিজ্ঞাপন

রিয়েলি এবার রিয়েলিই খুশি
১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর