১২ বছরে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সুবিধা বেড়েছে ১৬ শতাংশ
৩ আগস্ট ২০২১ ১৭:৫৫
ঢাকা: ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সরকার গঠন করেন তখন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা ছিল ৮ শতাংশেরও কম। তবে গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় সরকারি চাকরিজীবীদের আবসানের সুবিধা ইতোমধ্যে ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থ্যাৎ আবাসন ১৬ শতাংশ বেড়েছে।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার রেজাউল করিম সিদ্দিকী এ তথ্য জনান।
এর আগে, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গণপূর্ত অধিদফতর ও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নির্মিত দুই হাজার ৪৭৪ ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গৃহায়ণ সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনার সরকার যখন ক্ষমতায় আসেন তখন সরকারি কর্মকর্কতা-কর্মচারিদের আবাসন সুবিধা ছিল ৮ শতাংশেরও কম। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ করে রাজধানীতে কর্মরতদের আবাসন সংকট দীর্ঘদিনের। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি আবাসন ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাজধানীর আজিমপুর, মতিঝিল ও মালিবাগ সরকারি কলোনিতে বহুতল ভবন নির্মাণ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তেজগাঁওয়ে আবাসিক ভবন নির্মাণ এবং গণপূর্ত অধিদফতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মিরপুরে আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প অন্যতম।
গৃহায়ণ সূত্র জানায়, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে ১৪ তলা বিশিষ্ট পাঁচটি ভবনে মোট ৫৩৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এতে ১৪৮ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়। দুই একর জমির ওপর নির্মিত এসব অত্যাধুনিক ভবনে মাসিক, সাপ্তাহিক এমনকি দৈনিক ভিত্তিতে ভাড়া পরিশোধের মাধ্যমে বস্তিবাসীরা বসবাসের সুযোগ পাবেন।
সূত্র জানায়, গণপূর্ত অধিদফতর কর্তৃক নির্মিত মিরপুর, আজিমপুর, মতিঝিল ও মালিবাগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মিত দুই হাজার ৪৭৪টি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট উদ্বোধন করা হয়। যার মধ্যে ২৮৮টি ফ্ল্যাট গণপূর্ত অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং ৫৮টি ফ্ল্যাট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্ধারিত রয়েছে।
ঢাকার মিরপুর ৬ নং সেকশনে ১৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি ভবনে ২৮৮টি ফ্ল্যাট গণপূর্ত অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ১ জানুয়ারি ২০১৬ সালে আরম্ভ হয়ে ৩০ জুন ২০২১ সালে সমাপ্ত হয়। অন্যদিকে ঢাকার মালিবাগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৪৫৬টি ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১০ আগস্ট ২০১৬ সালে। এতে ২১২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা ভবনের এসব ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়। এসব ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ১০০০ এবং ৮০০ বর্গফুট। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় তিনতলা বিশিষ্ট একটি মসজিদ ও একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য ৪৪ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি ভবনে নির্মাণ করা হয়েছে ৫৮টি ফ্ল্যাট। সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে শুরু হয়ে জুন ২০২১ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। নবনির্মিত এসব ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮০০ বর্গফুট আয়তনের ৭টি, ১৫০০ বর্গফুট আয়তনের ৭টি এবং ৮০০ বর্গফুট আয়তনের ৪৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক কার ওয়াশিং সিস্টেম।
অন্যদিকে আজিমপুর সরকারি কলোনির অভ্যন্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় ৯৯০ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৩ দশমিক ৬২ একর জমিতে ১৭টি ভবনে মোট ১২৯২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। এক হাজার এবং ৮০০ বর্গফুট আয়তনের এসব ফ্ল্যাটে রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা। এসব ভবনে সুপরিসর কমন স্পেসসহ একাধিক লিফট রয়েছে। প্রকল্প এলাকায় একটি ছয়তলা বিশিষ্ট কমন ফ্যাসিলিটিজ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/এনএস
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় টপ নিউজ সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সুবিধা