বেশি লাভের আশায় বন্ডের কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি করত ১১ জন
৩১ জুলাই ২০২১ ১৫:০১
ঢাকা: প্রতিবছর সরকার বন্ডের আওতায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফ্রি সুবিধা দিয়ে থাকে। আইন অনুযায়ী বন্ডের লাইসেন্সপ্রাপ্তরা এই সুবিধার আওতায় বন্ডের পণ্য রফতানি কাজে ব্যবহার ছাড়া দেশের কোথাও বিক্রি করতে পারবে না। যদি কেউ বিক্রি করেন তবে বন্ড কমিশনারের কাছে ২০ শতাংশ কমিশন বাণিজ্য শুল্ক প্রদান করে অনুমতি নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু একটি সংঘবদ্ধ চক্র চোরাই পথে খোলা বাজারে বন্ড সুবিধার কাপড় বিক্রি করে আসছিল।
বন্ডের অপব্যবহার করে শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের একটি টিম বন্ডের অপব্যবহার করে শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগে বন্ড সুবিধায় আমদানীকৃত ৫০৮ রোল চোরাই পর্দার কাপড়, ১৮ হাজার ৭৫০ কেজি চোরাই কাপড় বোঝাই ৬টি কাভার্ডভ্যানসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে। জব্দ হওয়া কাপড়ের মূল্য প্রায় ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
গ্রেফতাররা হলেন শাহাদাত হোসেন, সাইফুল ইসলাম জীবন, রুবেল আকন, মো. মাসুম, মনির হোসেন, রবিন ওরফে হৃদয় সরদার, শাহিন হাওলাদার, আরিফ হোসেন, সোহাগ ফরাজী, মো. নাজিম ও কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এই কাপড়গুলো চীন থেকে চট্টগ্রামে আসে। এরপর ময়মনসিংহ ভালুকায় যায়। সেখান থেকে রাজধানীর সাতরাস্তা হয়ে এলিফ্যান্ট রোডে যায়। গত শুক্রবার( ২৯ জুলাই) রাত হতে ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলিফ্যান্ট রোড ও তেজগাঁও থানাধীন সাতরাস্তার মোড় এলাকা হতে ওই ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, তারা বন্ড সুবিধায় বিদেশ হতে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে। এসব কাপড় অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে সুবিধামত সময়ে চোরাইপথে খোলাবাজারে বিক্রি করত।
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘এই সংঘবদ্ধ চক্রটি দেশেই চোরাই পথে সেসব পণ্য এনে খোলা বাজারে বিক্রি করে আসছিল। একটি গবেষণায় দেখা গেছে এই অসদুপায় ব্যবহারে দেশে ৮০ হাজার কোটি টাকা বন্ড সুবিধার অপব্যবহারে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও লোকসান-হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য তারা পাননা। দেশীয় বাজারে ব্যবসা করা বস্ত্রখাত হুমকির মুখে পড়ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা ইসলামপুর কেন্দ্রিক এরকম আরেকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছি। এই চক্রের পেছনে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে, বস্ত্রখাতকে হুমকিকে ফেলছে তাদেরকেও খুঁজে বের করা হবে।’
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
সারাবাংলা/ইউজে/একে