Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মৌসুমি ব্যবসায়ীর দেখা নেই, বরিশালে চামড়া বেচাকেনায় অনাগ্রহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ জুলাই ২০২১ ১৭:১৫ | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ১৭:২৪

বরিশাল: দরপতন আর ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পড়ে থাকায় এবার চামড়া নিয়ে বরিশালের ব্যবসায়ীদের আগ্রহ নেই। বেশিরভাগ চামড়াই আসছে মাদরাসা কিংবা এতিম খানাগুলোর মাধ্যমে। এছাড়া চামড়া কেনায় সরকার নির্ধারিত দরও অনুসরণ হচ্ছে না। দামাদামি করে বিক্রি হচ্ছে চামড়া। অনেক চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে বাকিতেও।

স্থানীয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির পর প্রতিবছরই পশুর চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তাদের মাধ্যমে চামড়া যায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হাতে। তারা চামড়া কিনে প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করেন ঢাকার ট্যানারিগুলোতে। কিন্তু এবার বাজারে চামড়া নিয়ে আসা সরবরাহকারীদের মধ্যে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সংখ্যা নগণ্য।

বিজ্ঞাপন

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দর না থাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাঠপর্যায়ে চামড়া সংগ্রহ করেনি। মাদরাসাসহ বিভিন্ন এতিমখানা কর্তৃপক্ষের হয়ে চামড়া নিয়ে আো হচ্ছে পাইকারদের কাছে। আর মাদরাসা কর্তৃপক্ষের হয়ে বাজারে চামড়া নিয়ে আসা ব্যক্তিরা বলছেন, দর না থাকায় তারাও তেমন একটা চামড়া কেনেননি। বেশিরভাগ চামড়াই এলাকাভিত্তিকভাবে বিনামূল্যে সংগ্রহ করছেন। তবে সেসব চামড়া সংগ্রহ করে বাজার পর্যন্ত আনতে যে পরিবহন খরচ হয়েছে, সেটিও দিতে চাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, আকারভেদে গরুর চামড়া কিনছেন দুইশ থেকে চারশ টাকায়। আর খাসির চামড়া কিনছেন ১০ থেকে ২০ টাকায়। চামড়া সংগ্রহ করে তাতে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ২৫০ টাকার একটি চামড়া প্রক্রিয়াজাত ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ আরও ২৫০ টাকা খরচ হচ্ছে তাদের।

বরিশালের পদ্মাবতী এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী মো. শামিম উল্লা বলেন, এবারে চামড়া সংগ্রহের কোনো ইচ্ছাই ছিল না। তাই কোরবানির দিন বিকেল পর্যন্ত বাসাতেই ছিলাম। যারা বিগত সময়ে বিশ্বাস করে চামড়া দিয়েছেন, বিকেলের পর তাদের ফোনে বের হতে বাধ্য হয়েছি। আসলে ট্যানারি ব্যবসায়ীদের কাছে লাখ লাখ টাকা আটকে আছে। ফলে এখন নিজের কাছে থাকা ও ধার করা সামান্য কিছু টাকা নিয়ে চামড়া কিনতে বসেছি। বলতে পারেন দীর্ঘদিনের অভ্যেসের কারণেই চামড়া কিনছি।

বিজ্ঞাপন

শামিম উল্লা জানান, সরকার নির্ধারিত রেটে চামড়া কিনতে পারছেন না। আবার যাদের কাছ থেকে চামড়া কিনছেন, তাদের সবাইকে নগদ টাকাও দিতে পারছেন না। তিনি বলেন, বরিশালে সর্বোচ্চ ১৮ ফুটের ওপরে চামড়া পাওয়া যায় না। আর এরকম চামড়াও খুব কম। তবে সব চামড়ার দরই আলোচনা করে ঠিক করে কিনতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকার নির্ধারিত রেটে  কেনা যাচ্ছে না।

শামিমও জানালেন, ৩০০ টাকায় কোনো চামড়া কেনা হলে সেটিকে লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করতে শ্রমিকের খরচসহ আরও ৩০০ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। এরপর পরিবহন খরচ দিয়ে ট্যানারিতে পাঠালে মোট খরচ উঠে আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন এই চামড়া ব্যবসায়ী।

জানতে চাইলে বরিশাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির বলেন, একসময়ে বহু চামড়া ব্যবসায়ী বরিশালে থাকলেও ট্যানারি মালিকদের কাছে টাকা আটকে যাওয়ায় এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় চামড়া ব্যবসায়ীর পরিমাণ কমে এসেছে। অনেকে তো ব্যবসার ধরনও পাল্টে ফেলেছেন। এবার হিসেব করলে মাত্র দু’জনে চামড়া সংগ্রহ করছি।

তিনি আরও বলেন, নিজের অবস্থান থেকে যদি বলি— এবারে পরিচিতদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চামড়া সংগ্রহ করছি। সেখানে হয়তো বাকিতে আর নগদ মিলিয়ে নিজে সর্বোচ্চ ৬ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ করতে পারি।

সারাবাংলা/টিআর

চামড়া ব্যবসায়ী মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী

বিজ্ঞাপন

৭ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর