Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘করোনার ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুলাই ২০২১ ২১:৩৮

গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ফাইল ছবি

ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন না দেওয়া পর্যন্ত সরকারিভাবে দেশের মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের)।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘স্মরণ সভা ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ’ অনুষ্ঠানে সরকারের কাছে এ দাবি করেন জিএম কাদের। দলটির সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় জিএম কাদের বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা কোনো ছোট বিষয় নয়। সারা পৃথিবী ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশকেও তা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সকল রাজনৈতিক দল, এনজিও এবং পেশাজীবীদের নিয়ে করোনা মোকাবিলা করতে সরকার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সরকারকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে— করোনা মোকাবিলায় আমরা সরকারের যেকোনো কর্মকাণ্ড সফল করতে আগ্রহী।

জিএম কাদের আরও বলেন, প্রায় সকল উন্নত দেশগুলো মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার ভ্যাকসিন নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারছে না। যেখানে ২৭ থেকে ২৮ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দরকার, সেখানে রেডিও টিভিতে সরকার ঘোষণা করছে পাঁচ লাখ ডোজ, ১০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসছে। বাকি ভ্যাকসিন কখন, কোথা থেকে আসবে তা কেউ জানেনা। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক।

তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন হচ্ছে করোনা মোকাবিলার প্রধান অস্ত্র। সবাইকে যতদিন না ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে, ততদিন সরকারিভাবে দেশের মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধে অসহায় মানুষদের জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকার বিষয়ে সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, পুনরায় লকডাউন (কঠোর বিধিনিষেধ) দিলে কর্মহীন মানুষের পরিবার প্রতি মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। কারও ঘরে খাবার না থাকলে সে কখনোই লকডাউন মানবে না। যার ঘরে ক্ষুধার জ্বালায় শিশু কাঁদবে, সে বাইরে বের হবেই। সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় দেশের বাজেট তৈরি হয়। ওই টাকার মালিক দেশের সাধারণ মানুষ। করোনাকালে দেশের মানুষ কষ্টে আছে, তাদের বাঁচাতে হবে। তাই অন্তত দুই কোটি পরিবারকে মাসে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। অবশ্যই রাজনৈতিক বিবেচনা না করে প্রকৃত দরিদ্র পরিবারের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে অর্থ সহায়তা দিতে হবে।

এরশাদের স্মৃতিচারণ করে জিএম কাদের বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিটি উপজেলায় হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন। আমরা এক বছরের বেশি আগেই বলেছি— প্রতিটি হাসপাতালে মঞ্জুরিকৃত ডাক্তার, নার্স এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে হবে, দেওয়া হয়নি। প্রতিটি হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে বলেছি— কিন্তু সকল হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়নি। অক্সিজেনের অভাবে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে। যাদের টাকা আছে তারা রাজধানীতে এসে বেসরকারি হাসপাতালে চিৎিসা নিচ্ছেন। আর যাদের টাকা নেই, তারা বিনা চিকিৎসায় গ্রামেগঞ্জে মারা যাচ্ছেন। দরিদ্র মানুষেরা করোনা টেস্ট করতে পারছেনা, বিনাচিকিৎসায় মারা যাচ্ছে- সরাকারি হিসাবে তাদের সংখ্যা আসছে না। আইসিইউ থেকে বের করলেই মারা যাবেন মা, কিন্তু তা জেনেও টাকার অভাবে সন্তানরা করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষ মাকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বের করছেন। এমন হৃদয়বিদারক অসংখ্য ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাজেটে খুবই কম টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় স্বাস্থ্য খাতে। আর বরাদ্দের বিশাল অংশই দুর্নীতিবাজরা লুটপাট করে খায়। যারা মানুষের জানমালের দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছে, তারা দায়িত্বে অবহেলা করেল শুধু জনসাধারণ নয়, আল্লাহর দরবারেও জবাব দিতে হবে।

জাতীয় যুব সংহতি আহবায়ক এইচএম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে সংগঠনটির সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ আরও বক্তব্য রাখেন— প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড মো. রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতির যুগ্ম-আহ্বায়ক তারেক এ আদেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, জিয়াউর রহমান বিপুল ও অ্যাড মাঈন উদ্দিন মাইনুসহ আরও অনেকে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস

করোনাভাইরাস করোনার ভ্যাকসিন গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান টপ নিউজ সুচিকিৎসা নিশ্চিত