Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিধিনিষেধ শিথিলের আগের দিনেই সব ‘স্বাভাবিক’!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুলাই ২০২১ ২১:১১ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২১ ০১:২৯

ঢাকা: চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে মধ্যরাতে। কিন্তু তার আগেই রাজধানী ঢাকা যেন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার আগের দিনই ঢাকা শহর তার সেই চেনা রূপে ফিরে এসেছে প্রায়। গণপরিবহন না চললেও অন্যান্য যানবাহনের পর্যাপ্ত চাপ ছিলেই। আর না খুললেও খোলার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে দোকানপাট বা শপিং মলগুলোতে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আজ বুধবার (১৪ জুলাই) চলমান কঠোর বিধিনিষেধের শেষ দিন। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত আট দিন শিথিল থাকবে এসব বিধিনিষেধ। তবে এর মধ্যেও মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, পরতে হবে মাস্ক। তবে বুধবার আমিন বাজার ব্রিজ এলাকা, গাবতলী, কল্যাণপুর, শ্যামলী, শেরেবাংলা নগর, কলেজ গেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শিথিল হওয়ার আগেই প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে ঢাকা।

বিজ্ঞাপন

সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুর রোডের শ্যামলীর সড়কে শত শত যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি পণ্যবাহী সব ধরনের যান, কোরবানির পশু বহনকারী ট্রাক, প্রচুর রিকশার উপস্থিতিও ছিল।

শেরেবাংলা নগর এলাকার সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ সরণিতেও যানবাহনের প্রচুর চাপ দেখা গেছে। এ সড়কের কয়েকটি স্থানে যানবাহনের জট তৈরি হতেও দেখা যায়।

সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পুলিশ চেকপোস্টের কাছে কিছু সময়ের জন্য গাড়ির জট তৈরি হয়। এ সময় ট্রাফিক পুলিশ সড়ক স্বাভাবিক করতে তৎপরতা হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ১১টার দিকে কল্যাণপুর বাস স্ট্যান্ডে বিআরটিসির এক বাসে যাত্রী ওঠাতে দেখা যায়। সেখানকার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক পথচারী বলেন, বাসে যাত্রী ওঠানো দেখে মনে হচ্ছে লকডাউন শেষ হওয়ার একদিন আগেই বাস চলাচল শুরু হয়ে গেছে! তবে বাসটি দ্রুত স্থানত্যাগ করায় বাসের চালক বা সহকারীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

কল্যাণপুর থেকে গাবতলী যাওয়ার পথে দারুস সালামে রোকসানা বেগম নামের এক মুদি দোকানির সঙ্গে বিধিনিষেধের মধ্যেকার সময়ের বেচাবিক্রি নিয়ে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে জানান, লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম পাঁচ-ছয় দিন দোকান খোলেননি। এরপর দোকান খুললেও বেচাবিক্রি আগের মতো হয় না। গত দুই-তিন দিন ধরে বেচাকেনা বেড়েছে। ‘লকডাউনে আমাদের দেখার কেউ নেই’— বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন রোকসানা।

সাড়ে ১১টার দিকে কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় হয়ে গাবতলী বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক যাত্রীবাহী বাস ধোয়া-মোছা ও মেরামত করছেন। রফিক নামের এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, ‘কাল থেকেই তো রাস্তায় গাড়ি চলাচল শুরু হবে। অনেকদিন ধরে গাড়ি বন্ধ থাকায় গাড়ির টুকটাক কিছু কাজ করছি। রাস্তায় নামার পর যেন গাড়ির কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, সেজন্য সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি না দেখে নিচ্ছি।’

বাস স্ট্যান্ডের ভেতরে কাউন্টারের সামনে ফাঁকা জায়গায় দেখা গেল, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণ করছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। সেখানে কয়েকশ পরিবহন শ্রমিকের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। তবে অনুষ্ঠানস্থলের অল্প জায়গায় শত শত মানুষের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কোনো উপায় ছিল না। এর মধ্যেও আয়োজনকারীরা মাইকে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছিলেন।

গাবতলী গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খোলা ট্রাকে করে গরু আসছে। গরু দেখতে এসেছেন— এমন কিছু ক্রেতাকেও সেখানে দেখা গেছে। তবে কোনো গরু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। গরুর পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঝে মধ্যে লোকজন গরু দেখতে আসছেন। কিন্তু কোনো গরু বিক্রি হচ্ছে না।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাবতলীর আমিনবাজার সেতুর পূর্বপ্রান্তের পুলিশ চেকপোস্টের সামনে যানবাহনের জট তৈরি হতে দেখা যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে কোরবানির পশু বহনকারী বেশিরভাগ ট্রাক এই সড়ক ব্যবহার করে থাকে।

সেখানে দায়িত্বপালনরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আবু ইউসুফ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ লকডাউনের শেষ দিন। এজন্য রাস্তায় গাড়ির চাপ একুট বেশি। তবে অনেকে মনে করছে আজই লকডাউন শেষ, এজন্যও অনেকে রাস্তায় বের হয়েছেন। তবে আমাদের ট্রাফিক পুলিশ অন্যান্য দিনের মতোই দায়িত্ব পালন করছে। পুলিশ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছে।’

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

কঠোর বিধিনিষেধ বিধিনিষেধ শিথিল স্বাভাবিক ঢাকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর