তিস্তায় কমছে পানি, বাড়ছে ভাঙন
১০ জুলাই ২০২১ ১০:৫০ | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১ ১৪:২২
লালমনিরহাট: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার লালমনিরহাটের চরাঞ্চলের মানুষজন পানিবন্দী হওয়ার একদিন পরেই কমতে শুরু করেছে পানি। নদীর পানি কমতে শুরু করায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১০ জুলাই) সকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বন্যাকবলিত আরাজিছালাপাক, চৌরাহা, কুটিরপাড় ও দক্ষিণবালপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ি থেকে পানি বের হলেও পলি পড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে বাসিন্দাদের। চৌরাহা এলাকায় আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে নদীতে ফেলতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যেই গ্রামটির অধিকাংশ বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত গ্রামটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
দেখা যায়, পানি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পলি জমিগুলো কাদামাটিতে ভরে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নদীপাড়ের লোকজন।
চৌরাহা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল গাফফার জানান, গত কয়েক দিনে চোখের সামনে ২৫টি পরিবারের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখেছেন। হুমকির মুখে রয়েছে ওয়াবদা বাঁধটিও।
মহিষখোচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত প্রায় এক কিলোমিটার বালুর বাঁধটি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একাধিক এলাকাবাসী দাবি করেন, ‘অপরিকল্পিত বালুর বাঁধটির নাম দিয়েছেন তারা ‘রাজনৈতিক বাঁধ’। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, বাঁধের কথা বলে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে বেশিরভাগ বরাদ্দ আত্মসাৎ করা হয়। কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাই তারা এ বাঁধটিকে রাজনৈতিক বাঁধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান মতি বলেন, আকস্মিক বন্যায় চরাঞ্চলে তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা মূল ভুখণ্ড থেকে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বসবাস করায় কেউ তাদের খোঁজখবর রাখেন না।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চৌরাহা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সেখানে জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, সরকারিভাবে পানিবন্দী পরিবারগুলো সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এসব পরিবারের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে ৩ মে. টন চাল মজুদ রয়েছে।
গোকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, তিস্তার পানি কমে যাওয়ায় কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে কাজও চলছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, বন্যার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে।
সারাবাংলা/এএম