দাফনের জন্য ২৫ হাজার, আহতরা পাবেন ১০ হাজার টাকা
৯ জুলাই ২০২১ ১৭:০৪ | আপডেট: ৯ জুলাই ২০২১ ১৯:০৮
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় আগুনে নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য পরিবারকে সরকারি সহায়তা হিসেবে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম বেপারী শুক্রবার (৯ জুলাই) সারাবাংলাকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আগুনের ঘটনায় আমাকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। লাশের পরিচয় শনাক্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।’
নারায়ণগঞ্জ সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবাস চন্দ্র সাহা জানিয়েছেন, রূপগঞ্জে কারখানা থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৯টি লাশেরই ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। প্রতিটি লাশেরই সুরতরহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।
তিনি জানান, রূপগঞ্জের কারখানা থেকে ৪৯টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এরপর মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। প্রতিটি লাশেরই ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হবে। এরপর ক্রসম্যাচিং করে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুডস লিমিটেডের মালিক সজীব গ্রুপ। ফুডস ও বেভারেজ জগতে এই গ্রুপের পণ্যের প্রসার রয়েছে। এদের ৯টি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হলো হাসেম ফুডস লিমিটেড।
কারখানায় আগুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনজন মারা যান বৃহস্পতিবার বাকিদের মরদেহ ওই কারখানার চতুর্থ তলা থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই তলায় তালা লাগানো থাকায় আটকেপড়া মানুষরা বের হতে পারেননি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারখানার চতুর্থ তলা থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে তিন জন মারা গিয়েছেন। সব মিলিয়ে ওই কারখানায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। কারখানাটির চতুর্থ তলাটি তালাবদ্ধ ছিল। ফলে আগুন লাগার পর সেখান থেকে কেউ বের হতে পারেনি। সে কারণেই এতগুলো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।’
উদ্ধার করা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে রূপগঞ্জের হাসেম ফুডসের কারখানাটিতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ডেমরা, কাঞ্চন, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৮টি ইউনিট কাজ করে। তা সত্ত্বেও সারারাতে আগুন নেভানো যায়নি। শুক্রবার দিনের বেলা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরপরই কারখানায় উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়।
আরও পড়ুন
রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস ফ্যাক্টরিতে আগুন, ২ শ্রমিকের মৃত্যু
১৬ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি হাসেম ফুডস কারখানার আগুন
রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস কারখানায় আগুন, আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু
সারাবাংলা/এসএসআর/একে