হাসেম ফুডস কারখানার তালাবদ্ধ ৪র্থ তলায় ৪৯ মরদেহ
৯ জুলাই ২০২১ ১৪:৫৮ | আপডেট: ৯ জুলাই ২০২১ ১৭:১৪
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস ও সজীব গ্রুপের খাদ্যপণ্যের কারখানার চতুর্থ তলা থেকে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এখনো কারখানার পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় অভিযান চলছে। এর আগে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই কারখানায় অগ্নিদগ্ধ তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। সব মিলিয়ে হাসেম ফুডস কারখানার আগুন এখন পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে অর্ধ শতাধিক প্রাণ।
শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে কারখানার এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ও কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
কন্ট্রোল রুম থেকে ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার জানিয়েছেন, আমরা সকাল থেকে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়েছি। এখনো কারখানাটিতে উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। অভিযান শেষ হলে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, কারখানার চতুর্থ তলা থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে তিন জন মারা গিয়েছেন। সব মিলিয়ে ওই কারখানায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, কারখানাটির চতুর্থ তলাটি তালাবদ্ধ ছিল। ফলে আগুন লাগার পর সেখান থেকে কেউ বের হতে পারেনি। সে কারণেই এতগুলো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। উদ্ধার করা মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। কারখানার পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় এখনো তল্লাশি চলছে।
এদিকে, রূপগঞ্জের ওই কারখানা থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৯টি মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পৌঁছেছে। শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহগুলো নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে রূপগঞ্জের হাসেম ফুডসের কারখানাটিতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ডেমরা, কাঞ্চন, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৮টি ইউনিট কাজ করে। তা সত্ত্বেও সারারাতেও সে আগুন নেভানো যায়নি। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি ফায়ার সার্ভিস। এদিন সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছি।
এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর শুরু হয় তল্লাশি। আর সে সময়ই কারখানার চতুর্থ তলা থেকে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই কারখানার আগুনে অগিদগ্ধ হয়ে স্বপ্না রাণী (৪৫) ও মিনা আক্তার (৩৩) নামে দুই শ্রমিক মারা যান। রাতে মোরসালিন (২৮) নামে আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
কারখানাটিতে আগুন লাগার পর অগ্নিদগ্ধ ও আহত হন অন্তত ২৫ জন। তাদের মধ্যে ছয় জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৫ জনকে ভর্তি করা হয় রূপগঞ্জের ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আরও পড়ুন-
রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস ফ্যাক্টরিতে আগুন, ২ শ্রমিকের মৃত্যু
১৬ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি হাসেম ফুডস কারখানার আগুন
রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস কারখানায় আগুন, আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর