Sunday 12 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ জুলাই ২০২১ ০০:১৬

ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে হাতিরঝিল এলাকায় একজন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া মুগদায় খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর মোহাম্মদপুর এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে মারা গেছেন এক লেগুনাচালক। সোমবার (৫ জুলাই) বিভিন্ন সময়ে এই ঘটনাগুলো ঘটে।

রাজধানীর হাতিরঝিলের মধুবাগ এলাকার একটি বাসায় তানিয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত সাড়ে নয়টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

তানিয়ার শাশুড়ি ইয়াছমিন আক্তার জানায়, তাদের বাসা হাতিরঝিল মধুবাগ এলাকায়। তার ছেলে তৌহিদের সঙ্গে তানিয়ার সম্পর্ক ছিল। এক বছর আগে তারা বিয়ে করে। কোন কাজ করে না তৌহিদ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। আজ সকালে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তৌহিদ তানিয়ার গায়ে হাত তোলে।

ইয়াছমিন বলেন, ‘তানিয়া আমার রুমেই ছিল। বিকেলে তৌহিদ বাসার বাইরে চলে যায়। তানিয়া রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তাকে ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে তৌহিদকে খবর দেই। পরে দরজা ভেঙে দেখি তানিয়া ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ঝুলে আছে। সেখান থেকে নামিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে মারা যায়।’

তানিয়ার বোন রাজিয়া সুলতানা জানায়, তানিয়ার শ্বশুর বাড়ি আর তাদের বাড়ি পাশাপাশি। তানিয়ার স্বামী তৌহিদ কিছুই করতো না। মাঝে-মধ্যেই তাদের ঝগড়া হতো। তখন তানিয়া বাপের বাড়ি চলে যেত। পরে বুঝিয়ে আবারও পাঠিয়ে দেওয়া হতো।

বিজ্ঞাপন

রাজিয়া বলেন, ‘তানিয়ার শাশুড়ির কাছ থেকে জানতে পারি, সে ফাঁসি দিছে। আমরা দেখিনি। তানিয়াদের বাসায় যেতেই দেখি তৌহিদ পালিয়ে যাচ্ছে। আমার বোন ফাঁসি দিয়েছে নাকি মেরে ফেলেছে এখন কিছুই বলতে পারব না।’

এদিকে রাজধানীর মুগদায় একতলা বাসার ছাদে কানামাছি খেলার সময়ে পড়ে গিয়ে সাদিয়া আক্তার মিম (৯) নামে এক শিশু মারা গেছে। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যায় মিম।

মিমের মা হাসি বেগম জানান, তারা উত্তর মুগদা ঝিলপাড়ের একটি একতলা বাসায় ভাড়া থাকে। মিমের বাবা স্বপন ভান্ডারী রিকশা চালায়। সে নিজে বাসা বাড়িতে কাজ করে। মিম স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে পড়তো। তিনি মেয়ের মধ্যে মিম ছিল মেঝ।

হাসি বেগম আরও জানান, ঘটনার সময় সে বাসায় কাজ করছিল। মিমের বড় বোন নাদিয়াসহ আরও কয়েকটি শিশু একতলার ছাদে কানামাছি খেলছিল। এ সময় মিমের চোখ রুমাল দিয়ে বাঁধা ছিল। খেলার এক পর্যায়ে অন্য শিশুদের ধরতে গিয়ে ছাদ থেকে পরে গুরুতর আহত হয় সে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মুগদা থানায় জানানো হয়েছে।

এছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছুরিকাঘাতে আহত লেগুনাচালক আলমগীর হোসেন (৪০) চিকিৎসাধীন ঢাকা মেডিকেলে মারা গেছেন। সোমবার (৫জুলাই) বিকেলে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত বুধবার (১ জুলাই) দুপুরে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান বাসস্ট্যান্ডে ছুরিকাঘাতে আহত হয় সে।

আলমগীরের বাড়ি ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেওলা উইলবাড়ি গ্রামে। বর্তমানে দুই ছেলে ও স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে নিয়ে মোহাম্মপুর ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় ভাড়া থাকতো।

আলমগীরের শ্যালক আকতার হোসেন জানায়, আলমগীর মোহাম্মপুর থেকে শ্যামলী রোডে লেগুনা চালাতো। বুধবার দুপুরে বাসস্ট্যান্ডে আরেক আলমগীর তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে সেদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

আকতার আরও জানান, আলমগীর কেন তাকে ছুরিকাঘাত করেছিল আমরা জানতে পারিনি। আহত আলমগীরের কাছ থেকেও জানা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকে আলমগীর অচেতন অবস্থায় ছিল।

মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম কিবরিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আলমগীর নামে এক ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে হাসপাতালে মারা গেছেন। এমন সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে এসেছি। কি কারণে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল এখনও জানা সম্ভব হয়নি। নিহত আলমগীরের পেটে ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।

মৃতদেহের সুরতহাল করে মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাতে পারব বলে জানান এসআই গোলাম কিবরিয়া।

সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম

মৃত্যু

বিজ্ঞাপন

সিটি ছাড়ছেন কাইল ওয়াকার
১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৫১

আরো

সম্পর্কিত খবর