ব্যাংকে চলছে ঢিলেঢালা লেনদেন, গ্রাহক উপস্থিতি কম
৫ জুলাই ২০২১ ১৪:৫০ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০২১ ১৮:৩৬
ঢাকা: টানা চারদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (৫ জুলাই) শুরু হয়েছে ব্যাংক, বিমা ও পুঁজিবাজারে লেনদেন। এদিন সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক বিধিনিষেধের পঞ্চমদিনে ব্যাংকগুলোতে চলছে ঢিলেঢালা লেনদেন। অধিকাংশ ব্যাংকে গ্রাহকদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ব্যাংকের বেশির ভাগ কাউন্টার ছিলো গ্রাহক শূন্য। ফলে ব্যাংকপাড়ায় চলছে নীরবতা।
সোমবার (৭ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও যারা ব্যাংকে লেনদেন করতে এসেছেন তাদের বেশির ভাগই টাকা জমা দিতে এসেছেন।
এদিন রাজধানীর মতিঝিল, আরামবাগ, শান্তিনগর, পল্টনসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় লেনদেন চলাকালীন সময়ে উত্তরা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ডাচবাংলা ব্যাংক, এসআইবিএল, এনআরবিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, রুপালি ব্যাংক, ইসলামি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।
দেখা যায়, বেশিরভাগ ব্যাংকই ছিলো ফাঁকা। কোথাও গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন নেই। গত বৃহস্পতিবার কঠোর বিধিনিষেধ জারির আগের দিন বেশির ভাগ ব্যাংকে গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন থাকলেও আজ ছিলো তার বিপরীত ভিন্ন চিত্র। অধিকাংশ ব্যাংকে গ্রাহক না থাকায় অনেক কর্মীদের বসে গল্প করতে দেখা গেছে।
এদিন ব্যাংকগুলোতে উপস্থিতি কম থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে লেনদেন। প্রতিটি ব্যাংকের শাখাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে বাড়তি ব্যবস্থায় নেওয়া হয়েছে। এসময় ব্যাংকগুলোতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যাংকে প্রবেশ পথে নিরাপত্তা রক্ষীরা বিষয়টি কঠোরভাবে পরিপালন করছেন। লেনদেন করতে আসা গ্রাহকদের মাস্ক না থাকলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথগুলোতেও একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েকটি এটিএম বুথ ঘুরে দেখা গেছে এটিএম-এর বাটনে কিছুক্ষণ পরপরই জীবাণুনাশক তরল স্প্রে করা হচ্ছে। ব্যাংক ও এটিএম বুথের মেঝেতেও ছেটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। পাশাপাশি এটিএম বুথ ব্যবহার করা পর গ্রাহকের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকরা এইসব বিধি নিষেধ মানতে চাচ্ছেন না।
মতিঝিলে ডাচবাংলা ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্রাঞ্চে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ব্যাংকের ভেতরের অধিকাংশ কাউন্টার ছিলো একেবারেই ফাঁকা। একইচিত্র দেখা উত্তরা ব্যাংকের মতিঝিল লোকাল শাখায়ও। সেখানে কোন গ্রাহক নেই বললেই চলে। অধিকাংশ কাউন্টারে ব্যাংক কর্মীরা খোশগল্প করছেন।
ডাচবাংলা ব্যাংকের মতিঝিল ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যাঞ্চের ম্যানেজার আবদুল বারী মোল্লা বলেন, ‘আজ ব্যাংকে গ্রাহকের উপস্থিতি অন্য দিনের তুলনায় অনেক কম। সরকারের কঠোর বিধি নিষেধের কারণে বাইরে বের হওয়া কড়াকড়ি হওয়াই খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ ব্যাংকে লেনদেন করতে আসছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ব্যাংকের লেনদেন করতে আসছেন তাদের মাস্ক পরে আসতে হচ্ছে। মাস্ক না পড়ে কেউ ব্যাংকে ঢুকতে পারছেন না।’
অন্যদিকে রাজধানীর মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় গিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ কাউন্টার ফাঁকা। কর্মকর্তারা বসে গ্রাহকের অপেক্ষা করছেন। কিন্তু গ্রাহক না থাকায় ঢিলেঢালাভাবে লেনদেন হচ্ছে।
সোনালী ব্যাংকের অফিসার মোতাহার হোসেন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে টানা চার দিন পর ব্যাংক খুললো। গ্রাহক উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ২০/২৫ শতাংশের কম হবে, এটাই স্বাভাবিক।’
সারাবাংলা/জিএস/এমও