Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাড়ি বন্ধে ভোগান্তি, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ জুন ২০২১ ১৮:৫৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ‘সীমিত লকডাউনের’ মধ্যে কর্মস্থলে যাবার জন্য সড়কে আসা শ্রমিকরা গাড়ি না পেয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে ঘন্টারও বেশিসময় ধরে গাড়ির জন্য অপেক্ষার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শ্রমিকরা, যাদের মধ্যে অধিকাংশই পোশাক কারখানায় কর্মরত।

বুধবার (৩০ জুন) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে নগরীর আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, দেওয়ানহাট ও টাইগারপাসে মোড়ে তারা বিক্ষোভ করেন। এসময় সড়কে বিভিন্ন অফিস ও কারখানায় কর্মরতদের বহনকারী যানবাহন আটকা পড়ে। রিকশা চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন সড়কে শ্রমিকরা প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

বিজ্ঞাপন

সীমিত লকডাউনের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অফিস, পোশাকসহ বিভিন্ন কলকারখানা চট্টগ্রামে পুরোদমে খোলা আছে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় প্রথম দিন থেকেই রিকশায় বাড়তি ভাড়া গুণে, কেউ রাইড শেয়ারিংয়ের মোটর সাইকেলে অথবা পায়ে হেঁটে আবার কেউ লকডাউন অমান্য করে আসা গাড়িতে চড়ে পৌঁছাতে হচ্ছে কর্মস্থলে।

বুধবার থেকে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের নির্দেশে মোটর সাইকেলে আরোহী পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যাত্রীর তুলনায় রিকশা অপ্রতুল। আবার অতিরিক্ত ভাড়া গুণে অনেক নিম্ন আয়ের লোকজন রিকশায় উঠতে পারছেন না। এ অবস্থায় তাদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এ ছাড়া বুধবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে সড়কে নেমে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হয় শ্রমিকদের।

ভোগান্তির একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর আগ্রাবাদ, চৌমুহনীসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা সড়কে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন এবং লকডাউনে কর্মস্থলে যাবার জন্য পর্যাপ্ত গাড়ির ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

সিইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার কর্মচারি নাজিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসা বাকলিয়ায়। দুই দফা রিকশা নিয়ে টাইগারপাস আসতে হচ্ছে। এখানে এলে অন্তত মোটর সাইকেল পাওয়া যায় কিংবা কখনও কখনও বাস আসে। এখন মোটর সাইকেলে ওঠা বন্ধ। বৃষ্টির মধ্যে বাস-রিকশা কিছু নেই। আবার অফিসে যেতে দেরি হলে অনুপস্থিত দেখানো হচ্ছে। সব ঝামেলা কি আমাদের পোহাতে হবে?’

চৌমুহনী এলাকার একটি পোশাক কারখানার কর্মী বিউটি দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসা হাজারি গলি। রিকশায় করে প্রতিদিন অফিসে যেতে খরচ হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা। কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হলেও আমাদের জন্য করা হয়নি। অথচ গাড়ির ব্যবস্থা করা দরকার ছিল শ্রমিকদের জন্য। আমাদের বেতন কম। অফিসে ঠিকমতো না গেলে চাকরি চলে যাবে।’

বিক্ষোভের খবর পেয়ে বিভিন্ন স্পটে পুলিশ গিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এসময় শ্রমিকরা পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।

জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকালে বৃষ্টি ছিল। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিলেন। এর ওপর রাস্তায় গাড়ি ছিল না। শ্রমিকরা একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে বিক্ষোভ করেন। তাদের প্রায় সবাই বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলি। তাদের দাবি শুনে বিজিএমইএ’র সঙ্গে কথা বলে সকল শ্রমিকের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতে বলেছি। বিজিএমইএ আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা গাড়ির ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেবে।’

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাাবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ি না পেয়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলেন। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি।’

সারাবাংলা/আরডি/একে

করোনা কোভিড-১৯ গণপরিবহন গণপরিবহন বন্ধ টপ নিউজ নভেল করোনাভাইরাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর