স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামীর খালাস হাইকোর্টে
২৭ জুন ২০২১ ২৩:৪৬
ঢাকা: বরিশালে কোহিনুর বেগম নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামী মোস্তফা সরদারকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৭ জুন) বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আসামির করা আপিলের শুনানি শেষে এই রায় দেওয়া হয়।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ নোয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুনুর রশীদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমেদ।
পরে আইনজীবী শিশির মনির জানান, সব বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ এবং চিকিৎসা সনদপত্র অনুসারে কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। তাই তার স্বামী মোস্তফা সরদার খালাস পেয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কসবায় ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মোস্তফা সরদারের চৌচালা ঘরের মাচার আঁড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় কোহিনুরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বাবা বাদী হয়ে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে মোস্তফাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের দুই মাস আগে মোস্তফা সরদার প্রথম স্ত্রী কোহিনুরের অনুমতি ছাড়া একই এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বুলু বেগমকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে মোস্তফা ও কোহিনুরের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। মোস্তফা ও কোহিনুরের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মোস্তফা সরদারের দ্বিতীয় বিয়ের সূত্র ধরে কোহিনুরকে হত্যা করা হয়েছে।
ওই বছরের ৩১ মে পুলিশ তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এই মামলায় ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মোস্তফার দ্বিতীয় স্ত্রী বুলু বেগম ও তার আগের স্বামী লাল মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়।
আইন অনুযায়ী এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে আসামিও আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স এবং আসামির আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে আজ (২৭ জুন) রায় দেন আদালত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম