ট্রিপল মার্ডারের ময়নাতদন্ত শেষ, আসল খুনি শফিকুল— দাবি স্বজনদের
২০ জুন ২০২১ ১৯:১৯
ঢাকা: কদমতলীতে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা সোমবার (২০ জুন) বিকেলে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন।
মর্গ সূত্র থেকে জানা গেছে, মৃতদেহ থেকে ভিসেরা, নেক টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত ৩ জনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতরা হলেন- মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী মৌসুমি ইসলাম (৪৫) ও ছোটমেয়ে জান্নাতুল ইসলাম (২১)।
নিহত মৌসুমির ছোট বোন সোনিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘শফিকুল ষড়যন্ত্র করে তার স্ত্রী মেহজাবীনকে দিয়ে খুনের স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মূলত কাজটা শফিকুল নিজেই করেছে। এখন সে নাটক সাজিয়ে নিজেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থতার ভাব ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। হত্যার পর বাচ্চাকে জিম্মি করে স্ত্রীকে দিয়ে পুলিশে ফোন করিয়েছে শফিকুল। আর একটা মেয়ে কখনও তিন জন মানুষকে একসঙ্গে মারতে পারে না। শফিকুল বেঁচে থাকলে আরও খুন করবে।’
সোনিয়া আরও বলেন, ‘প্রায়ই স্ত্রী মেহজাবিনকে মারধর করতো শফিকুল। শ্যালিকা জান্নতুলের সঙ্গে যে তার অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো এটা আমরা জানতাম। জান্নাতুল ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয় শফিকুল। তখন থানায় অপহরণ মামলাও করা হয়েছিল। জান্নাতুলের বিয়ে ঠিক করলে শফিকুল গিয়ে বাধা দিতো, বলতো এটা আমার বউ।’
‘আমার কোনো অনুশোচনা হচ্ছে না’
‘মারধর করা ছিল শফিকুলের কাজ। বিয়ের আগে আমিনুল নামে এক যুবক মেহজাবিনকে পড়াতে আসতো। ওই অবস্থায় শফিকুলের সঙ্গে মেহজাবিনের বিয়ে হয়ে যায়। এরপর আমিনুলের সঙ্গে মেহজাবিনের সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতো সে, এ নিয়েই তাকে মারপিট করতো। পরে আমিনুলকে ডেকে এনে শফিকুল তাকে মেরে ফেলছিল। ২০১৬ সালের সেই খুনের মামলায় ৮ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিলো তার। ওই মামলায় শফিকুলের শাশুড়িও আসামি ছিল’, বলেন নিহতদের এই স্বজন।
নিহত মাসুদ রানার বড় ভাই সাখাওয়াত হোসেন জানান, তাদের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রাম। মাসুদ ২৬ বছর সৌদি আরবে ছিল। সর্বশেষ ৩ মাস আগে সে দেশে ফেরে। লাশ তিনটি জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সাখাওয়াত বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে গাঢ় সম্পর্ক ছিল না আমাদের। ওদের পরিবারে যে এতো সমস্যা তা কখনও বুঝতে পারিনি। শ্বশুরের কাছে শফিকুল বিভিন্ন সময় টাকা চাইতো, আর শালিকার সঙ্গে তার খারাপ সম্পর্ক ছিলো। সে শ্বশুরের সম্পত্তি একাই ভোগ করার প্ল্যান নিয়েই এগিয়ে গেছে। অবশেষে তিনজনকে মার্ডার করে সফলও হলো।’
এর আগে, মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে কদমতলী থানা পুলিশ। মাসুদ রানার সুরতহালকারী উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম উল্লেখ করেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার পর থেকে শনিবার ভোর ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় তাদের চা ও পানির সঙ্গে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, ওড়না ও নাইলনের রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
সারাবাংলা/এসএসআর/এমও