Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরীমনিকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে: হারুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুন ২০২১ ১৯:৫৮ | আপডেট: ১৫ জুন ২০২১ ২০:২৪

ঢাকা: পরীমনি যে অন্যায়ের শিকার হয়েছেন, তার সুবিচার যেন তিনি পান সে জন্য পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিএমপি উত্তর) হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, পরীমনি এ দেশের একজন স্বনামধন্য চিত্রতারকা। তার সঙ্গে একটি অন্যায় কাজ করা হয়েছে। সেই অন্যায়কারীদের আমরা আইনের আওতায় আনতে পেরেছি। এখন ‍সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যেন পরীমনি ‍সুবিচার পান, সেই চেষ্টা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ের গেটে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এসময় পরীমনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন। তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। ডিবি ডিসি গুলশান মশিউর রহমানসহ পুলিশ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন-

এর আগে, বিকেল ৪টার দিকে পরীমনি, চয়নিকা চৌধুরী ও পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ডিবি কার্যালয়ে আসেন। সেখানে পরীমনির কাছ থেকে নানা বিষয় শোনেন ডিবি কর্মকর্তারা।

হারুন অর রশীদ বলেন, পরীমনির বিষয়টি আমরা আগে জানতাম না। আইজিপি স্যার জানার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা তড়িৎ গতিতে আসামিদের গ্রেফতার করেছি। পরীমনিও এরই মধ্যে বলেছেন, পুলিশের ভূমিকা ম্যাজিকের মতো ছিল।

বিজ্ঞাপন

‘আমরা তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমরা সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চাই। চলচ্চিত্র জগতের কারও কোনো ধরনের সমস্যা হলেও আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে,’— বলেন গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এর আগে, গত ৮ জুন রাতে আশুলিয়া এলাকার ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হন পরীমনি। সেদিন রাতে পরীমনি তার বনানীর বাসা থেকে বোন বনি, কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও তার বন্ধু অমির সঙ্গে গাড়ি করে উত্তরার দিকে রওনা দেন। পরীমনির অভিযোগ, অমি কৌশলে তাদের বোট ক্লাবে নিয়ে যান। সেখানে অমির সহযোগিতায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং তাকে শারীরিকভাবেও জখম করেন।

ঘটনার পরই ঘটনাস্থল আশুলিয়া এলাকা থেকে ফিরে বনানী থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে জানিয়েছিলেন পরীমনি। তবে ওই সময় পরীমনি অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলেন বলে তার অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছিল পুলিশ।

এ বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যুগ্ম কমিশনার হারুন বলেন, পরীমনি বনানী থানায় গিয়েছিলেন ভোর ৪টার দিকে। ওই সময় ওসি ছিলেন থানায়। কিন্তু পরীমনি অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলেন। তিনি নিজেই যেটি বলেছেন, তাকে জোর করে মদ খাওয়ানো হয়েছিল। পুলিশ এ অবস্থায় তাকে প্রথমে চিকিৎসা নিতে বলেছে, পরে পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালেও গিয়েছেন তিনি। কিন্তু ওই সময় বা পরেও কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।

পরে রোববার (১৩ জুন) রাতে পরীমনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দিয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার কথা জানান। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে রাতেই তিনি বনানীর নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনও করেন। বলেন, এ ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়ায় তিনি প্রাণভয়ে ভীত বলেও জানান সাংবাদিকদের।

পরে রোববার দিবাগত রাতেই রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান সরদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পরীমনির বাসায় যায়। পরীমনির অভিযোগের ঘটনাস্থল সাভার থানার অধীন হওয়ায় তার কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে সেই অভিযোগ সাভার থানার কাছে পৌঁছে দেয় রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাভার থানায় মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়ের হয়।

মামলায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে আরও চার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এরপর দুপুরেই অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও তিন নারীকে উত্তরা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার হলে বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত তাদের রিমান্ডে দিয়েছেন। পরীমনির দায়ের করা মামলাতেও পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন। মাদকের মামলার রিমান্ড শেষ হলেও ওই মামলার রিমান্ড শুনানি হবে আদালতে।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

গোয়েন্দা পুলিশ টপ নিউজ পরীমনি পরীমনির মামলা যুগ্ম কমিশনার হারুন