Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহামারি উপেক্ষিত, কর্মসংস্থানে বরাদ্দ রাখা হয়নি: যুব ইউনিয়ন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ জুন ২০২১ ২২:১১ | আপডেট: ৬ জুন ২০২১ ০১:২৪

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ও এই মহামারির অভিঘাত থেকে উত্তরণের বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে গেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের নেতারা। একইসঙ্গে করোনার অভিঘাতে মানুষ কাজ হারালেও বাজেট প্রস্তাবনায় কর্মসংস্থানের জন্য সরাসরি কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

শনিবার (৫ জুন) বিকেলে পল্টন মোড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। যুব ইউনিয়ন সভাপতি হাফিজ আদনান রিয়াদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি গোলাম রাব্বী খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি চৌধুরী হোসেনসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভ সমাবেশে যুব ইউনিয়ন নেতারা বলেন, প্রবৃদ্ধির আসক্তিতে মত্ত সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেকোনো প্রক্রিয়ায় প্রবৃদ্ধির সূচক উন্নত রাখতে সংখ্যা পূরণে সরকারের যে প্রচেষ্টা, তা নিছক ব্যর্থতাকে আড়ালের কৌশলমাত্র। অথচ কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন-জীবিকা সংকটে। এই মুহূর্তে বৃহত্তর তরুণ ও যুব জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান তৈরি অন্যতম একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ।

বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও কর্মসংস্থান সমস্যা সমাধানে তা সাফল্য দেখাতে পারেনি। যে উন্নয়ন পরিকল্পনায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না, তা যতই চকচকে হোক না কেন, প্রকারন্তরে তা ফাঁপা এবং সরকারের ব্যর্থতাকে আড়ালের অপকৌশল মাত্র।

বিজ্ঞাপন

বক্তরা আরও বলেন, গত বছর করোনার অভিঘাতে চাকরিচ্যুত হয়েছিলে ৩৬ শতাংশ মানুষ। অনেকের চাকরি থাকলেও নিয়মিত বেতন-ভাতা পাননি। করোনা সংকটে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েই বিপদগ্রস্ত। কোভিড-১৯-এর কারণে নতুন করে দারিদ্র্য বাড়ছে। বিআইডিএস বলছে, নতুন ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্রের কাতারে যুক্ত হয়েছে। অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে গ্রামে ফিরে গেছেন। চাকরির বাজার কমে যাওয়ায় তরুণরা আজ হতাশ। এ পরিস্থিতিতে আমাদের কর্মসংস্থান তৈরির জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন ছিল। আমাদের একটি গণমুখী এবং কর্মমুখী বাজেট প্রণয়ন করা জরুরি ছিল। কিন্তু সরকার সে পথে না গিয়ে মুষ্টিমেয় লুটেরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের খুশি করতে হাস্যকর ও জবাবদিহিতাহীন একটি বাজেট প্রণয়ন করেছে।

যুব ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, করোনার প্রথম চার মাসেই বেকারত্ব বেড়েছিলে ১০ গুণ। আর্থিক সংকটে পড়া ৪৬ দশমিক ২২ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় ভেঙে এবং ৪৩ শতাংশের বেশি পরিবার আত্মীয়-স্বজনের সাহায্য-সহায়তার ওপর নির্ভর করে সংসার চালিয়েছে। কলেজের স্নাতকদের মধ্যে মাত্র ১৯ শতাংশই পূর্ণকালীন বা খণ্ডকালীন কর্মরত, প্রায় অর্ধেক বেকার। কিন্তু তরুণদের বেকারত্বকে অর্থনীতির একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি আমাদের বিভিন্ন নীতিমালায়। জাতীয় যুবনীতি ২০১৭-তে তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হয়নি। নীতিমালায় তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, আমরা বেকারত্বের অভিশাপ দেখতে চাই না। আমরা যুবকদের হতাশ দেখতে চাই না। আমরা যুবকদের উদ্যোগী হিসেবে দেখতে চাই। তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য নতুন চাকরি বা কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে বাজেটে একটি বিশেষ বরাদ্দ রাখা এখন সময়ের দাবি। বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে বিভিন্নভাবে কর্মসংস্থানের জন্য একটি কার্যকর উপায় বের করতে হবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

বাজেট ২০২১-২২ বিক্ষোভ সমাবেশ যুব ইউনিয়ন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর