বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কিশোরীর মৃত্যু, বাঁচাতে গিয়ে গেল আরও ২ জনের প্রাণ
৫ জুন ২০২১ ১৭:১৪ | আপডেট: ৫ জুন ২০২১ ২৩:১৯
ঢাকা: রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় বৃষ্টির সময় লোহার দরজা ধরতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল এক কিশোরী। তাকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে আরও এক কিশোরী। তাদের দু’জনকে বাঁচাতে গিয়ে এক বৃদ্ধও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। তিন জনের কাউকেই বাঁচানো যায়নি।
শনিবার (৫ জুন) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে এক কিশোরীকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। প্রায় একই সময়ে বাকি দু’জনকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক কমিউনিটি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত তিন জনের মধ্যে প্রথম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল কিশোরী সাবিনা পাখি (১০)। তাকে ধরতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আরেক কিশোরী ঝুমা (১৪)। পরে তাদের দু’জনকে বাঁচাতে গিয়ে সেখানকার একটি বাড়ির দারোয়ান আবুল হোসেন (৬৫) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
পাখিকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া প্রতিবেশী হাবিবুর সারাবাংলাকে জানান, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেলের পেছনে সোনা মিয়ার গলির মাজেদা বেগমের টিন শেড বাড়িতে ভাড়া থাকে শিশুটির পরিবার। দুপুরে বৃষ্টির সময় বাসার সামনে খেলা করার সময় পাখি অচেতন হয়ে পড়ে। সেখানে পাখির সঙ্গে আরও এক শিশু ও এক বৃদ্ধও অসুস্থ হয়েছেন। তাদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
হাবিব বলেন, তখন আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। এক কিশোর শিশুটিকে (পাখি) হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল। আমিও তাদের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছি। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটি মারা গেছে।
ঢামেক হাসপাতালে পাখির মা কুলসুম আক্তার জানান, তাদের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চড় মানিকপুর গ্রামে। মালিবাগ আবুল হোটেলের পেছনে সোনা মিয়ার গলিতে একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। পাখির বাবা মহসিন আলী পেশায় রিকশাচালক। পাখি স্থানীয় একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
কুলসুম আক্তার আারও জানান, দুপুরে বৃষ্টির সময় পাখি বাসার সামনে ঝুমার সঙ্গে খেলছিল। এ সময় পাখি ঘরের লোহার দরজায় হাত দিলে বিদ্যুতায়িত হয়। ঝুমা পাখিকে ধরতে গেলে সেও আহত হয়। এ সময় বাড়ির দারোয়ান আবুল হোসেন তাদের দু’জনকে বাঁচাতে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
পরে পাখিকে ঢামেক হাসপাতাল এবং ঝুমা ও আবুল হোসেনকে কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিন জনকেই চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। ওই বাসার সামনে বিদ্যুতের একটি খুঁটি আছে। বৃষ্টির সময় বজ্রপাতও হচ্ছিল। ওই সময় সম্ভবত কোনোভাবে তাদের বাসা বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়েছিল। আর তা থেকেই তিন জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
এসআই জানান, ঝুমার বাবার নাম জাবেদ আলী। তাদের বাড়ি সিলেট জেলায়।
সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর
কিশোরীর মৃত্যু টপ নিউজ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট