‘আমাকেও খুন করতে চেয়েছিল ফাতেমা’
১ জুন ২০২১ ১৮:৫৭ | আপডেট: ১ জুন ২০২১ ২২:২২
ঢাকা: ১৬ মাসের সন্তান রিহানকে কোলে নিয়ে স্বামী ময়না মিয়ার মৃতদেহ নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আসেন দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন আক্তার। তিনি বলেন, তাকেও খুন করতে চেয়েছিল ময়নার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম শিল্পী।
শনিবার (২৯ মে) রাতে ময়নাকে ফোন করলে ফাতেমা ধরে বলে, ‘তুই ঢাকায় আয়। তোর ময়নারে একবারে দিয়া দিমু। তুই ময়নারে লইয়া সংসার করবি’।
নাসরিন আক্তার বলেন, তিনি যদি তখন ঢাকায় আসতেন তাহলে সন্তানসহ তাকেও খুন করতো ফাতেমা। তাকে যখন ফোনে ঢাকায় আসার কথা বলছিল, তার আগেই স্বামীকে মেরে ফেলেছিল সে।
নাসরিন আরও জানান, কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঢাকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে ঢাকায় এসে পুলিশের কাছে জানতে পারেন, ময়নার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা তাকে খুন করেছে। তিনি তার স্বামী হত্যার বিচার চান।
নাসরিন জানান, তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরে। আট বছর আগে ময়নার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তখন ময়না ময়মনসিংহ এলাকায় সিএনজি চালাতেন। শুক্রবার (২৮ মে) রাতে ময়নার সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। শনিবার (২৯ মে) ময়নার কিশোরগঞ্জ যাওয়ার কথা ছিল। সোমবার (৩১ মে) সকালে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারেন ময়না খুন হয়েছে। তারপর ঢাকায় আসেন।
এদিকে, মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করনে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ ও প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস।
এর আগে, মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেন বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামছুর রহমান। সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, অপরাধী ফাতেমা বেগম ওরফে শিল্পী (৩৪) অপর অপরাধীর সহযোগীতায় ভিকটিম ময়না মিয়াকে (৩৮) ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করে।
পরে মৃত ব্যক্তির দুই হাত, দুই পা এবং মাথা আলাদা করে দেহটি একটি ড্রামে ভরে মহাখালী আমতলী জামে মসজিদের পাশে পাকা রাস্তার ওপর ফেলে আসেন। দুই হাত, দুই পা মহাখালী বাস টার্মিনালে এবং মাথা গুলশান লেকের পশ্চিম পাশে ফেলে দেন।
ঢামেক হাসপাতাল মর্গে কথা হয় মৃত ময়না মিয়ার স্ত্রী ও ভাইদের সঙ্গে। ময়নার বড় ভাই সুরুজ মিয়া বলেন, তাদের বাড়ি সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জে। বর্তমানে বনানী কড়াইল টিঅ্যান্ডটি কলোনিতে প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম শিল্পী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন তার ভাই। পেশায় ছিলেন সিএনজি চালক। রমজান মাসের আগে সিলেট গিয়েছিল ময়না। ঈদের পরের দিন তার সঙ্গে ময়নার শেষ কথা হয়।
তিনি আরও বলেন, সোমবার (৩১ মে) ময়নার দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছ থেকে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তিনি ঢাকায় আসেন। জানতে পারেন, প্রথম স্ত্রী’র হাতে খুন হয়েছেন ময়না। তার ধারণা ময়না দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হতো। এ কারণেই ময়নাকে হত্যা করেছে প্রথম স্ত্রী।
সারাবাংলা/এসএসআর/একেএম
কাটা হাত-পা উদ্ধার টপ নিউজ হাত-পা-মস্তকবিহীন বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার