ফাইজারের ১ লাখ ভ্যাকসিন ঢাকায়
১ জুন ২০২১ ০০:৪৫ | আপডেট: ১ জুন ২০২১ ১৫:৫৩
ঢাকা: সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশে এসেছে ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ‘কমিরন্যাটি’ ভ্যাকসিন। বৈশ্বিক ভ্যাকসিন জোট গ্যাভি’র বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন বিতরণের উদ্যোগ কোভ্যাক্সের আওতায় এই ব্র্যান্ডের এক লাখ ৬০০ ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে দেশে। মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে অবস্থিত সেন্টার ফর মেডিকেল বায়োটেকনোলজি শাখার আলট্রা লো ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হবে।
সোমবার (৩১ মে) রাত ১১টা ১৩ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে এই ভ্যাকসিন। সোমবার মধ্যরাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কোভ্যাক্সের আওতায় ফাইজারের এই ১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসছে বলে জানা গেছে বেশ আগেই। তবে গত কয়েকদিনে এই ভ্যাকসিনের বাংলাদেশে আসার সময় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর থেকে। প্রথমে জানানো হয়েছিল, এটি ৩০ মে আসবে বাংলাদেশে। এরপর একবার জানানো হয় এটি দেশে আসবে ৩১ মে, একবার জানানো হয় ৩০ মে রাতেই আসবে ভ্যাকসিন, একবার জানানো হয় আরও ১০/১২ দিন লাগবে ভ্যাকসিন আসতে।
ফাইজারের এই ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছানোর তারিখ নিয়ে সৃষ্ট এই জটিলতার মধ্যেই সোমবার রাতে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দেশে এলো এই ভ্যাকসিন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ সারাবাংলাকে বলেন, ইকে-৫৮৪ ফ্লাইটে করে কোভ্যাক্সের আওতায় ফাইজার-বায়োএনটেকের ১ লাখ ৬২০ ডোজ ভ্যাকসিনের চালান দেশে পৌঁছেছে। ভ্যাকসিনের চালান বুঝে নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর ও ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত ১৮ মে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বরাত দিয়ে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম জানান, ২ জুন কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে ফাইজারের অন্তত এক লাখ ছয় হাজার কোভিড ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পাঠাবে গ্যাভি। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই ফাইজারের ভ্যাকসিন দেশে চলে আসছে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এর মধ্যে শনিবার (২৯ মে) অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভ্যাকসিন দেশে আসবে রোববার (৩০ মে)। পরদিন রোববার, যেদিন ভ্যাকসিনটি আসার কথা, সেদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনলাইন বুলেটিনে জানানো হয়, ফাইজারের ভ্যাকসিন এদিন আসছে না। ১০ থেকে ১২ দিন সময় লেগে যেতে পারে।
তবে এর কিছু সময় পরই আবার তিনি জানান, নির্ধারিত সময়েই আসছে এই ভ্যাকসিন। কিছুক্ষণ পর আবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের বার্তা পাঠিয়ে জানান, সোমবার রাতে আসছে ফাইজারের মোট এক লাখ ৬২০ ডোজ ভ্যাকসিন।
এর আগে, ২৭ মে দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। তারা জানায়, ১২ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী যে কাউকে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে। তবে এই ভ্যাকসিন কারা পাবে, সেটি সরকারের ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে বলে জানায় অধিদফতর।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ফাইজারের এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সিরিঞ্জ চলে এসেছে দেশে।
বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োজন কার্যক্রম শুরু করে। এর জন্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ডের তিন কোটি ভ্যাকসিন কেনার জন্য সরকার অগ্রিম টাকা দিলেও এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির কাছ থেকে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারত সরকার বাংলাদেশকে ৩২ লাখ ২ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। ফলে ওই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পাওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর