ফাইজারের ১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসছে আজ
৩০ মে ২০২১ ১০:১১ | আপডেট: ৩০ মে ২০২১ ১২:৩৪
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ‘কমিরন্যাটি’ ভ্যাকসিন আসছে আজ। বৈশ্বিক ভ্যাকসিন জোট গ্যাভির বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন বিতরণের উদ্যোগ কোভ্যাক্সের আওতায় আসছে এই ব্র্যান্ডের এক লাখ ৬০০ ডোজ ভ্যাকসিন।
শনিবার (২৯ মে) সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক। তিনি বলেন, কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে রোববার রাত ১১টা ২০ মিনিটে ফাইজারের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা দেশে পৌঁছাবে।
২৭ মে দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। ১২ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী যে কাউকে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে। তবে এই ভ্যাকসিন কারা পাবে, সেটি সরকারের ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে অধিদফতর।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর জানিয়েছে, অক্সফোর্ড ও সিনোফার্মার ভ্যাকসিনের মতো ফাইজারের ভ্যাকসিনটিও নিতে হবে দুই ডোজ। প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন থেকে চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হবে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের উদ্যোগ নেয় ‘দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, গ্যাভি’। এই দেশগুলোর ভ্যাকসিন পাওয়া নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘কোভ্যাক্স’। বাংলাদেশ এই বৈশ্বিক উদ্যোগ থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য আবেদন করে গত বছরের ৯ জুলাই। ১৪ জুলাই গ্যাভি সেই আবেদন গ্রহণ করে।
এই কোভ্যাক্স উদ্যোগের আওতাতেই বাংলাদেশে আসছে এক লাখ ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই কোভ্যাক্স থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। নানা কারণেই সেই তারিখ পিছিয়ে গেছে।
জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেকের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে মার্কিন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার। তবে এর পরিবহন ও সংরক্ষণ অনেক জটিল ও ব্যয়বহুল। ফাইজার ভ্যাকসিনের বর্তমান সংস্করণ শূন্যের নিচে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (-৭০ ডিগ্রি) তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এর ফলে বিশেষ যন্ত্রাংশ সম্বলিত ভ্যাকসিন কেন্দ্র ছাড়া এগুলো প্রয়োগ করা যায় না। তবে গত মাসে কোম্পানিটির সিইও আলবার্ট বৌরলা জানান, ভ্যাকসিনের নতুন একটি সংস্করণ আনা হচ্ছে, যা সাধারণ ফ্রিজারেও রাখা যাবে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য গত বছরের ২ ডিসেম্বর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দেয়। ৮ ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। জানুয়ারিতে জরুরি ব্যবহারের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনকে তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ফাইজারের দাবি, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত ধাপে ভ্যাকসিনটি মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে ৯৫ শতাংশ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। আর ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের ওপর এটি শতভাগ কার্যকর। সম্প্রতি কানাডায় ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের শিশুদের ব্যবহারের জন্য ফাইজারের ভ্যাকসিনকে অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কানাডার ফেডারেল সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সারাবাংলা/এসবি/এএম