ইউটিউবে ‘প্রশিক্ষণ’, মোবাইল চুরি করে পাল্টে দেন আইএমইআই নম্বর
২১ মে ২০২১ ১৯:৪৪ | আপডেট: ২১ মে ২০২১ ১৯:৪৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইউটিউব দেখে দেখে মোবাইল সেটের শনাক্তকরণ আইএমইআই নম্বর পাল্টানোর ‘প্রশিক্ষণ’ নিয়েছেন তারা। নিজেরাই মোবাইল চুরি করেন, আইএমইআই নম্বর পাল্টে ফেলেন। সেগুলো বিক্রির জন্য দিয়ে দেন দোকানে। যেসব মোবাইলের আইএমইআই নম্বর নিজেরা পাল্টাতে পারেন না, সেগুলো নিয়ে যান নিজেদের ঠিক করা দুইটি দোকানে। তাতেও কাজ না হলে সেগুলোর পার্টস খুলে বিক্রি করে দেন।
মোবাইল চুরির পর আইএমইআই নম্বর পাল্টে দেওয়া এমন একটি চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম পুলিশ। আর তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দুইটি দোকানে। সেখানে পাওয়া গেছে
৬১টি চোরাই মোবাইল ফোন। দুই দোকানিকেও আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার মোবাইল চোর একটি সিন্ডিকেটের সদস্য। ওই সিন্ডিকেটের প্রতিটি সদস্যই ইউটিউব থেকে আইএমইআই নম্বর পাল্টানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
নগরীর বাকলিয়া থানার শাহ আমানত সেতু এলাকার মান্নান টাওয়ারের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেলে ওই ‘মোবাইল চোর’ মাহবুব রেজা মিল্কিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে রাত পর্যন্ত মান্নান টাওয়ার ও সাজেদা মার্কেটের দু’টি দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ।
আটক বাকি দুই জনের একজন মান্নান টাওয়ারের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানের মো. ফেরদৌস (৩৩), আরেকজন সাজেদা মার্কেটের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের আরেক দোকানদার আবুল কালাম সানি (২৪)।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সারাবাংলাকে জানান, চোরাই মোবাইল বিক্রির তথ্য পেয়ে মান্নান টাওয়ারের সামনে অভিযান চালিয়ে মিল্কিকে একটি মোবাইল সেটসহ গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দু’টি দোকানে অভিযান চালিয়ে ৬১টি মোবাইল সেট ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। মিল্কি জানিয়েছে, মিল্কিসহ আরও তিন-চার জন মিলে সেটগুলো চুরি করে দোকানগুলোতে বিক্রির জন্য দিয়েছে।
ওসি রুহুল আমীন বলেন, ‘৬১টি সেটের প্রতিটিরই আইএমইআই নম্বর পাল্টানো পেয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদে মিল্কি জানিয়েছে, তাদের পাঁচ-ছয় জনের একটি সিন্ডিকেট আছে। তারা শাহ আমানত সেতু এলাকা এবং বিভিন্ন বাসা থেকে মোবাইল চুরি করে। নিজেরাই আইএমইআই নম্বর পাল্টায়। কোনো সেটের নম্বর পাল্টাতে না পারলে বা লক খুলতে না পারলে মান্নান টাওয়ার ও সাজেদা মার্কেটের দু’জন দোকানদারের কাছে যান। তারা পাল্টে দেন। এরপর সেগুলো বিক্রির জন্য তাদের কাছে দেওয়া হয়।’
আইএমইআই নম্বর পাল্টানোর কৌশল কিভাবে শিখেছে— এ প্রশ্নের জবাবে মিল্কি পুলিশকে জানিয়েছেন, ইউটিউব দেখেই তাদের চক্রের প্রত্যেক সদস্য আইএমইআই নম্বর পাল্টাতে শিখেছেন। তারা এই কাজে রীতিমতো পারদর্শী।
‘মিল্কি আরও জানিয়েছে, মোবাইল চুরির বিষয় নিয়ে চক্রের সদস্যরা সরাসরি ফোনে কথা বলেন না। তারা হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে কথা বলে। সাধারণত স্যামসাং, রেডমি, ওয়ালটন সেট তাদের টার্গেট। কারণ সেগুলোর আইএমইআই নম্বর পাল্টানো সহজ। এর বাইরে অন্য অ্যান্ড্রয়েড সেট পেলেও তারা লক খোলার চেষ্টা করেন। যেগুলোর লক খুলতে পারেন না, সেগুলোর পার্টস খুলে বিক্রি করে দেন,’— বলেন ওসি রুহুল আমীন।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর