গত একযুগ ধরে ঈদ আনন্দ নেই: মির্জা ফখরুল
১৪ মে ২০২১ ১৫:১০
ঢাকা: গত এক যুগ ধরে দেশে কোনো ঈদ আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (১৪ মে) দুপুরে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন- আজকে ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে। একদিকে করোনার ভয়াবহ আক্রমণ, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী সরকারের অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন। এই দুই দানবের হাত থেকে এই দেশ যেন রক্ষা পায় আজ সেই দোয়া আমরা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ঈদ বলতে যেটা বোঝায়, সেটা গত এক যুগ ধরে আমাদের নেই। কারণ, মিথ্যা মামলা, আমাদের নেতাকর্মীকে হত্যা করা, কমপক্ষে ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করার মধ্য দিয়ে ঈদের যে সত্যিকারের আনন্দ সেটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যারা আসামি হন, তাদের পরিবারে কখনো ঈদ আসে না- এটাই বাস্তবতা। আর এই সরকারের নির্মম অত্যাচার তো বর্ণনাতীত। এই অবস্থার মধ্যে কখনো ঈদের আনন্দ উপভোগ করা যায় না।’
‘আমরা এই দোয়া করেছি যে, দেশে যে ফ্যাসিস্ট সরকার, কর্তৃত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার থেকে যেন আমরা মুক্ত হতে পারি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে পারি’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘পবিত্র ঈদের দিনে আপনাদের মাধ্যমে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ঈদ মোবারক জানাচ্ছি, দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে এসেছিলাম তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। তার কবর জিয়ারত করতে। এই পবিত্র দিনে এইখানে দাঁড়িয়ে আমরা আল্লাহর কাছে এই দোয়া করেছি যেন অতি দ্রুত আমাদের নেত্রী, গণতন্ত্রের আপসহীন নেতা, গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থতা দান করুন।’
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী যখন আমাদের সঙ্গে থাকেন, তখন তিনি আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেন। গত তিন বছর তিনি আমাদের সঙ্গে নেই। এবারও তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি, তিনি যেন সুস্থ হয়ে দেশের জনগণের মাঝে ফিরে আসেন।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ধীরে ধীরে হলেও তিনি ইম্প্রুভ করছেন। তবুও চিকিৎসকেরা বলছেন, এখনো তারা অবস্থা ক্রিটিকাল। তবে অনেকগুলো বিষয়ে তার (খালেদা জিয়া) উন্নতি হয়েছে এবং তারা (চিকিৎসক) আশাবাদী তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন সরকারের ভুল পলিসির কারণে মানুষ কিভাবে বিভ্রান্ত হয়েছে। এমনকি বাড়ি যাওয়ার সময় পদপিষ্ঠ হয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছে। শুধুমাত্র পরিকল্পনার অভাবে তারা লকডাউন করছে, কিন্তু লকডাউন হচ্ছে না। গণপরিবহন বন্ধ করার কথা বলছে, কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ হচ্ছে না।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা যে প্রণোদনার কথা বলেছিলাম, সেই প্রণোদনা ঠিকমতো দিলে আজ এ রকম হতো না। খবর নিয়ে দেখন, কেউ প্রণোদনা পায়নি। প্রণোদনা না পেলে লকডাউন মানবে কেন মানুষ। তাদের তো খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে হবে।’
এর আগে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে সঙ্গে নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শ্রদ্ধা জানানোর পর মোনাজাত ও বিশেষ দোয়া শরিক হন তারা। দোয়া পরিচালনা করেন ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা নেছারুল হক।
দলের শীর্ষ নেতাদের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে একে একে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান।
সারাবাংলা/এজেড/এসএসএ