Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এবার চাঁদপুরে ঈদ সৌদি আরবেরও আগে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ মে ২০২১ ১৭:৩৯ | আপডেট: ১২ মে ২০২১ ২২:৪৬

চাঁদপুর: দীর্ঘ দিন ধরেই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করে আসছেন চাঁদপুরের তিন উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামের অধিবাসী। সে হিসাবে প্রায় প্রতিবছরই সারাদেশে যেদিন ঈদ উদযাপন করা হয়, এসব গ্রামে তার আগের দিন উদযাপন করা হয় ঈদ। তবে এবারে সৌদি আরবেরও আগের দিন ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন চাঁদপুরের সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা।

বুধবার (১২ মে) সারাদেশে যখন ২৯ রমজান ও সৌদি আরবে ৩০ রমজান পালন করা হচ্ছে, সেই দিনটিতেই ঈদ উদযাপন করছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা। দরবারের বড় পীরজাদা পীর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিসকাত চৌধুরী জানিয়েছেন, চাঁদপুরের ৫০টি গ্রাম ছাড়াও দেশের ২৫টি জেলায় সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারী আছেন। তারা সবাই ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন আজ। পাশাপাশি পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরিফের অনুসারীরাও আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার ভোরে ঘোষণা দেওয়ার পর বুধবার হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ জামে মসজিদে সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করেন বর্তমান পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী।

ঈদের নামাজ শেষে দেশের শান্তি কামনায় মোনাজাত করা করেন মুফতি যাকারিয়া আল মাদানী। তবে বাংলাদেশ তো বটেই, সৌদি আরবেরও আগে এই ঈদ উদযাপন করা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ঈদের নামাজ শেষে খুতবা পাঠ করছেন মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী

ঈদের নামাজ শেষে খুতবা পাঠ করছেন মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী

জানা যায়, সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ছয় ছেলেও এ মতবাদের প্রচার চালিয়ে আসছেন।

বিজ্ঞাপন

গতকাল মঙ্গলবার (১১ মে) সৌদি আরবের চাঁদ দেখার দায়িত্বে থাকা সংস্থা জানায়, এদিন দেশটির কোথাও শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। সে হিসাবে রমজান মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হবে। বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সৌদি আরবে ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন হিসেবে গণ্য হবে। মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশও বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে এ খবর জানার পর চাঁদপুরের আল্লামা ইসহাকের অনুসারীরাও বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রস্তুতি নেন। তবে বুধবার ভোরে পীরের দরবার থেকে ঘোষণা করা হয়, আজই (বুধবার) পহেলা শাওয়াল তথা ঈদুল ফিতর।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দরবারের বড় পীরজাদা পীর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিসকাত চৌধুরী বলেন, ফতোয়ার কিতাবে এভাবে এসেছে— যদি পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তেও চাঁদ দেখা যায় এবং সেই সংবাদ নির্ভরযোগ্য সূত্রে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তেও পৌঁছায়, তাহলে পূর্ব প্রান্তের মুসলিমদের জন্যও রোজা রাখা ফরজ, ঈদ করা ওয়াজিব।

তিনি বলেন, নাইজার, সোমালিয়া ও পাকিস্তানেও বেশ কয়েক জায়গায় গতকাল চাঁদ দেখা গেছে (যদিও পকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো বলছে, দেশটিতে বুধবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সে হিসাবে দেশটিতে শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপন হতে পারে)। নির্ভরযোগ সংবাদ যথেষ্ট পরিমাণ যাচাই-বাছাই করে আমরা বুঝতে পেরেছি শাওয়াল মাসের চাঁদ উদিত হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও না কোথাও মুসলিমরা সেটি দেখেছেন। সেই সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আমরা সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা যে যেখানে রয়েছেন, আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

ঈদ জামাতে ইমামতি করা মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী বলেন, আমরা হানাফি মাজহাবের অনুসারী। তবে কেবল হানাফি মাজহাবই নয়, চার মাজহাবের তিন মাজহাবেই (হানাফি, মালেকি ও হাম্বলি) এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে যে বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা গেলে এবং নির্ভরযোগ্য সূত্রে সে খবর পাওয়া গেলে সারাবিশ্বের সব মুসলিমই ঈদ বা রোজা, যখন যেটি আসে সেটি পালন করবে। চতুর্থ মাজহাব অর্থাৎ শাফেয়ি মাজহাবের অনেকেও এ বিষয়টির সঙ্গে একমত। সেই ধারাবাহিকতায় আজ (বুধবার) আমরা সাদ্রা দরবার শরিফে শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর পেয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি।

সারাবাংলা/টিআর

চাঁদপুর টপ নিউজ সাদ্রা দরবার শরিফ