আহমদ শফীর মৃত্যু: প্রাণনাশের আশঙ্কায় মামলার বাদী
২ মে ২০২১ ১৮:১৯ | আপডেট: ২ মে ২০২১ ২০:১৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রাণনাশের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরীর একটি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর শ্যালক মো. মঈন উদ্দিন। তিনি পরিকল্পিত নির্যাতনের মাধ্যমে আহমদ শফীর মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ করে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হেফাজতের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
রোববার (২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মো. মঈন উদ্দিন এই জিডি দায়ের করেন। জিডি নম্বর- ৮১। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা হীনতার কথা উল্লেখ করে মঈন উদ্দিন একটি জিডি করেছেন। আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
জানতে চাইলে মো. মঈন উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শফী সাহেবকে হত্যার অভিযোগে আমি আদালতে মামলা করেছিলাম। মামলা দায়েরের পর থেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধমকি পাচ্ছিলাম। ওই মামলা তদন্ত করে পিবিআই আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। এরপর আমি চট্টগ্রাম শহরের যে এলাকায় থাকি, আমার বাসার আশপাশে অপরিচিত, সন্দেহভাজনদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। সারাক্ষণ আমার গতিবিধি কেউ না কেউ ফলো করছে বলে আমার মনে হচ্ছে। আমার ধারণা, কেউ আমার চরম ক্ষতি অথবা প্রাণনাশের চেষ্টা করছে। এজন্য আমি রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি।’
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর শতবর্ষী ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন আমির শাহ আহমদ শফীর জীবনাবসান হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন তিনি। তিনদিন ধরে ওই মাদরাসায় আহমদ শফীকে অবরুদ্ধ করে ছাত্র বিক্ষোভ হয়। এর মধ্যেই গুরুতর অসুস্থ শফীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং ঢাকায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। মৃত্যুর পর থেকে শফীর অনুসারীরা তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছিলেন।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আহমদ শফীকে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ এনে তার শ্যালক মো. মঈন উদ্দিন বাদী হয়ে হেফাজতের ৩৬ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেন।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনাইদ বাবুনগরী এক সংবাদ সম্মেলনে ‘রাজনৈতিক চক্রান্তে’ এই মামলা দায়ের করা হয়েছে দাবি করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
২৬ ডিসেম্বর পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এসে মঈন উদ্দিন দাবি করেন, মামলা তুলে নিতে জুনায়েদ বাবুনগরী, মামুনুল হকসহ হেফাজতের কিছু নেতা তাকে ক্রমাগত হুমকিধমকি দিচ্ছেন।
ওই মামলা তদন্ত করে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল পিবিআই জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এর মধ্যে গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, পটিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে তাণ্ডব, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের কথিত স্ত্রী নিয়ে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া, বেশ কয়েকজন হেফাজত নেতার গ্রেফতারসহ নানা ঘটনার জেরে বাবুনগরী হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছেন।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস
আহমদ শফীর মৃত্যু প্রাণনাশের আশঙ্কায় বাদী মো. মঈন উদ্দিন হত্যা মামলা