মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল জনগণের রাষ্ট্র, পুলিশি রাষ্ট্র নয়: রব
১ মে ২০২১ ১৭:৫৩
ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি হয়ে বাংলাদেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
তিনি বলেন, অসংখ্য মানুষের আত্মদান ও সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল জনগণের রাষ্ট্র কায়েমের জন্য, পুলিশি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। বর্তমান সরকার শুধু ক্ষমতাকে সংহত করার জন্য রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে না দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে।
শনিবার (১ মে) জেএসডি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট আয়োজিত মহান মে দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শ্রমিক জোটের সভাপতি মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান আলোচক ছিলেন শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে আ স ম আবদুর রব বলেন, পুলিশি রাষ্ট্র আজ জনবিচ্ছিন্ন সরকারকে সাময়িক নিরাপত্তা দিচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রকে চূড়ান্ত ঝুঁকিতে ফেলেছে। এই নিপীড়নমূলক রাষ্ট্র গঠনের জন্য শ্রমিক-কৃষক রক্ত দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেনি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত একটি রাষ্ট্রকে গণবিরোধী রাষ্ট্রে পরিণত করার সব দায় এই সরকারকেই নিতে হবে।
রব বলেন, শ্রমিক সমাজকে রাষ্ট্রীয় রাজনীতি থেকে দূরে রেখে অগ্রগামী সমাজ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে না। তাই শ্রমিক সমাজকেও রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে সাংবিধানিকভাবে অংশীদারিত্ব প্রদান করতে হবে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নিরস্ত্র শ্রমিকের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে শ্রমিক হত্যার পর সরকার কোনো ধরনের দুঃখও প্রকাশ করেনি, এমনকি কোনো তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন মনে করেনি। বরং পুলিশ আবার শ্রমিকদের অবৈধ অস্ত্রধারী হিসাবে চিহ্নিত করে হত্যার জন্য শ্রমিকদেরকেই দায়ী করছে। পুলিশি রাষ্ট্র না হলে সরকার এত শ্রমিক নিহত ও আহত হওয়ার পরে নিশ্চুপ থাকার কথা নয়।
শ্রমিক নেতা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সালে শ্রমিকরা ছাত্র-জনতার সঙ্গে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশেও শ্রমিকদের অধিকার ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না, যা খুবই দুঃখজনক।
সভাপতির বক্তব্যে মোশারফ হোসেন বলেন, সভ্যতার কারিগর শ্রমিকদের নির্বিচারে হত্যা করার সরকারি সংস্কৃতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তন করে শ্রমজীবী, কর্মজীবী পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর অংশীদারিত্ব ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করার মাধ্যমেই মে দিবসের তাৎপর্য লালন করা সম্ভব।
আলোচনা সভার আগে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট এক র্যালির আয়োজন করে। র্যালি পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেএসডি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন বেলাল, মহানগর জেএসডি নেতা মোশারফ হোসেন, হাজী আক্তার ও অন্যান্য নেতারা।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর