কলাগাছ থেকে তৈরি হচ্ছে আঁশ, দরকার সরকারি সহায়তা
১ মে ২০২১ ০৮:৫১
গাইবান্ধা: কলাগাছ থেকে আঁশ উৎপাদন করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন বায়েছ উদ্দীনের ছেলে মোজাম উদ্দিন। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বপ্ন পরিত্যক্ত কলাগাছের আঁশ থেকে তৈরি সুতায় হবে উন্নতমানের কাপড়, শপিংব্যাগসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র। সেই সঙ্গে কলাগাছের বর্জ্য থেকে তৈরি জৈব দেশে সারের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে।
মোজাম জানান, এলাকার কলাচাষিরা জমি থেকে কলা কেটে নেওয়ার পর গাছগুলো যত্রতত্র ফেলে রাখে। এই গাছ কয়েকদিন পরই পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত করে। কলাগাছের বিকল্প ব্যবহারের উপায় খুঁজতে খুঁজতে চিন্তা করেন কলাগাছ থেকে পাটের মতো আঁশ উৎপাদনের। কারণ এর আঁশ যথেষ্ট মজবুত।
কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মোজাম এরপর নিজেই দীর্ঘ চেষ্টার পর তৈরি করেন আঁশ উৎপাদনের একটি মেশিন। যা দিয়ে তিনি ইতোমধ্যে আঁশ উৎপাদন শুরু করেছেন। তাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী।
তবে মেশিনটি ২৪ ঘণ্টা চালাতে কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়, এতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই স্বামী-স্ত্রী মিলেই কলাগাছ সংগ্রহ, পরিবহন, কলাগাছের বাকল তোলা, মেশিনে দিয়ে আঁশ বের করা, পানিতে ধোয়া এবং রোদে শুকানোর কাজ করেন। তবে সরকারিভাবে স্বল্প সুদে প্রয়োজনীয় ঋণ দেওয়া হলে এই কলাগাছের উচ্ছিষ্টকে শিল্প হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
তিনি জানান, বিদেশের বাজারে এই আঁশের চাহিদা আছে। গোবিন্দগঞ্জ মহিলা কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মোশফিকুর রহমান মিলনের সহায়তায় তিনি জানতে পেরেছেন চীনে এই আঁশের চাহিদা রয়েছে। এরইমধ্যে ঢাকার একটি কোম্পানির সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তারা প্রতি কেজি কলাগাছের আঁশের মূল্য ২৩০ টাকা দিতে চেয়েছে। সেই কোম্পানিতেই আঁশ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে এখন দিনরাত কাজ করছেন তিনি।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খালেদুর রহমান বলেন, ‘কলাগাছের বাকল থেকে আঁশ উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি। উৎপাদিত আঁশের নমুনা সংগ্রহ করে এর গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। যদি গুণগত মান বিবেচনায় আঁশের চাহিদা পাওয়া যায় তাহলে উদ্যোক্তা মোজাম উদ্দীনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমও