নন-কোভিড ইউনিটে খালেদা জিয়া, নেই কোনো উপসর্গ
২৮ এপ্রিল ২০২১ ২১:৫০ | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২১ ০০:২৮
ঢাকা: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শরীরে এখন আর করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই। এভারকেয়ার হাসপাতালের নন-কোভিড ইউনিটে ভর্তি রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সিটি স্ক্যান রিপোর্টে তার ফুসফুসে ‘বিন্দুমাত্র’ সংক্রমণও শনাক্ত হয়নি।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এসব তথ্য জানান।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমরা যখন ১৫ এপ্রিল উনার (খালেদা জিয়া) চেস্টের সিটি স্ক্যান করিয়েছিলাম, তখন বলেছিলাম মিনিমাম ইনভলমেন্ট আছে। গতকাল যে চেষ্ট সিটি স্ক্যান হয়েছে, সেখানে বিন্দুমাত্রও লাং ইনফেকশন পাওয়া যায়নি। করোনাভাইরাসের অন্য কোনো ধরনের উপসর্গও এই মুহূর্তে তার (খালেদা জিয়া) মধ্যে নেই।’
‘উনি কিন্তু এখন নন-কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। আন্তর্জাতিক অনুযায়ী, দুই সপ্তাহ পরে যদি সাইন-সিম্পটম না থাকে, তাহলে করোনা টেস্ট আর করার প্রয়োজন নেই। কারণ, উনার কাছ থেকে করোনা ছড়ানোর আর কোনো আশঙ্কা নেই,’— বলেন ডা. জাহিদ।
তিনি আরও বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) সব পরীক্ষা হলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সেগুলো রিভিউ করবেন। আমরা আশাবাদী, মেডিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনার পর সহসাই তার (খালেদা জিয়া) বাসায় ফেরার সম্ভবনা রয়েছে।’
খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তির কারণ ব্যাখ্যা করে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা জানেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন, তিন বারের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া— গত ১০ এপ্রিল তার করোনা টেস্ট পজিটিভ হওয়ার পর বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিছু টেস্ট করার জন্য গত ১৫ এপ্রিল তাকে এভারকেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিটি স্ক্যান ও নিয়মিত চেকআপের জন্য গতকাল (মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল) আমরা তাকে আবারও এভারকেয়ারে নিয়ে যাই।’
তিনি বলেন, ‘ওখানে নিয়ে যাওয়ার পর বেশকিছু পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা শেষ হতে বেশ সময় লাগে। এ জন্যই উনার (খালেদা জিয়া) ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিম এবং ওখানকার চিকিৎসকেরা তাকে ভর্তির পরামর্শ দেন। কারণ, উনাকে প্রতিদিন আনা-নেওয়া করা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সত্যিকার অর্থেই কষ্টকর ব্যাপার। সেদিক বিবেচনা করে চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে উনি সাময়িকভাবে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘উনার যে চিকিৎসা চলছিল বাসায়, সে চিকিৎসাসহ আরও কিছু নতুন ঔষধপত্র ওখানে যোগ করা হয়েছে এবং এখন তিনি স্ট্যাবল আছেন।’
তিনি বলেন, ‘কিছু পরীক্ষা আছে যা করতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। কোনো কোনো পরীক্ষাতে দুই দিনের প্রস্তুতি লাগে। করোনার কারণে গত দেড় বছর আমরা কোনো পরীক্ষা করাতে পারিনি। কিছু পরীক্ষা আছে হাসপাতালে না গিয়ে হয় না। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলোই এভারকেয়ার হাসপাতালে করানো হচ্ছে।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘সেখানে (এভারকেয়ার) আজ একটা মেডিকেল বোর্ড বসেছিল। এভারকেয়ার হাসপাতালের সাত সদস্যের একটি মেডিকেল টিম এবং এফ এম সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ম্যাডামের ব্যক্তিগত মেডিক্যাল টিমের ১০ সদস্য সেখানে ছিলেন। এ পর্যন্ত যত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে, সেগুলো রিভিউ করা হয়েছে। আরও কিছু পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সুপারিশ মোতাবেক পরীক্ষাগুলো আজ ও আগামীকাল করা হবে। সেই পরীক্ষার রেজাল্টের ওপর পরবর্তী সময়ে তার সার্বিক চিকিৎসা প্ল্যানিংটা কমপ্লিট হবে।’
‘আমরা খুবই আশাবাদী, আপনাদের মাধ্যমে আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই— খুব শিগগিরই উনি (খালেদা জিয়া) বাসায় ফিরে আসতে পারবেন,’— বলেন এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া টপ নিউজ ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন