হুইপ শামসুল হকের দুর্নীতির অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে
২৫ এপ্রিল ২০২১ ১০:৩৮ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২১ ১১:১৯
ঢাকা: ক্যাসিনো কাণ্ডে অভিযুক্ত চট্টগ্রাম ১২ আসনের সংসদ সদস্য হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আর সেই অনুসন্ধান প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সে জন্য খুব দ্রুতই শামসুল হককে জিজ্ঞাসাবাদও করা হতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যাদের নাম উঠে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রাম ১২ আসনের সংসদ সদস্য হুইপ শামসুল হক। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে নাম উঠে আসে প্রায় ২০০ জনের। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানটি পরিচালনা করা হয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। সে সময় দেখা যায়, কয়েকটি ক্লাবে কিভাবে মদ,জুয়া ও রমরমা টাকার খেলা চলেছে। দুদকের অনুসন্ধানে সেসব তথ্য উঠে আসার পরে এরইমধ্যে অনেকগুলো মামলাও দায়ের করেছে কমিশন।
এমনকি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের সময় ক্ষুব্ধ হয়ে শামসুল সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এমনকি সে সময় গণমাধ্যমে শামসুল বলেছিলেন, কোন প্রশাসন কি খেলোয়াড়দের ৫ টাকা বেতন দেয়। ওরা কীভাবে খেলে? টাকা কীভাবে আসে আর সরকার কি খেলোয়াড়দের কোনো টাকা দেয়?
দুদক সূত্রে জানা যায়, শামসুল হকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এবং ক্যাসিনো বিরোধী অভিযোগ রয়েছে। যে অভিযোগের অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাব থেকে অবৈধভাবে শতশত কোটি টাকা আয় করেছেন শামসুল হক। এ ছাড়া জুয়ার আসরসহ ক্যাসিনোতে তার অবদান রয়েছে। যা দুদক অনুসন্ধান করছে।
এদিকে এ বিষয়ে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘অনুসন্ধান এখনো চলমান রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পেক্ষাপটে অনুসন্ধান কিছুটা থমকে আছে। তবে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে যাদের নাম উঠে ছিল তার মধ্যে তার নামও আছে।’
ক্যাসিনোকাণ্ডে নাম এসেছিল এমন ২৪ ব্যক্তির দেড় হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই মধ্যে তাদের প্রায় ৬৫৫ কোটি কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করে সংস্থাটি। আর এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তও প্রায় শেষপর্যায়ে। ক্যাসিনো ঘটনায় দুদকের দায়ের করা ২২ মামলায় আসামি ২৪ জন।
অপরদিকে ক্যাসিনো ঘটনায় দুদক মামলা করে ঠিকাদার জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তার, বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রূপন ভূইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান, বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূইয়া, কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ, কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান (পাগলা মিজান), কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমান, যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী, কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ, যুবলীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম, যুবলীগের দফতর সম্পাদক আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান, ব্যবসায়ী মো. সাহেদুল হক, এনআর গ্লোবালের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার, গণপূর্তের সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. মুমিতুর রহমান ও তার স্ত্রী মোছা. জেসমীন পারভীন এবং গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৈাশলী উৎপল কুমার দে ও তার স্ত্রী গোপা দে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান। এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এরপর একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল আর গ্রেফতার হতে থাকে রাঘব বোয়ালরা।
সারাবাংলা/এসজে/একে