Sunday 14 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজ সলঙ্গা গণহত্যা দিবস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ এপ্রিল ২০২১ ০৯:৩৮

সিরাজগঞ্জ: ২৫ এপ্রিল সলঙ্গা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার চড়িয়া মধ্যপাড়া গ্রামে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় পাক হানাদার বাহিনী। এদিন পাকিস্তানি সৈন্যদের ব্রাশফায়ারে প্রায় দুই শতাধিক মুক্তিকামী বাঙালীর মৃত্যু হয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল পাবনা জেলার কাশিনাথপুর ডাববাগান নামক স্থানে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে অর্ধশতাধিক হানাদারের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে হানাদার বাহিনী ২৫ এপ্রিল সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে কাশিনাথপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। পথে বগুড়া-নগরবাড়ী সড়কের সলঙ্গা থানার চড়িয়া শিকার নামক এলাকায় ব্যারিকেডের মুখে তারা যাত্রাবিরতি দেয়। চড়িয়া শিকারের পূর্ব দক্ষিণ পাশে কাশিনাথপুর নামে অন্য একটি গ্রামের সন্ধান পায় তারা।

বিজ্ঞাপন

এ গ্রামকেই পাবনা জেলার কাশিনাথপুর মনে করে পাকবাহিনী খুঁজতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি।

তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদরদের সহযোগিতায় সন্ধান পান চড়িয়া মধ্যপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ঘাঁটির। তখন গ্রামের নিরীহ মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন। পাকবাহিনী সূর্যোদয়ের পূর্ব হতে গুলি চালাতে শুরু করেন এবং সকাল ৯টা পর্যন্ত গুলি অব্যাহত থাকে। ভস্মীভূত করে দেয় এলাকার ঘরবাড়ি। ওইদিন বিকেলে তারা চড়িয়া শিকারসহ আশেপাশের ৫/৭টি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মুক্তিকামী মানুষকে আটকের পর দুই লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। এ গণহত্যার শিকার পাটধারী গ্রামের ২৯ জন, কালীবাড়ী গ্রামের ১৩ জন, শিকার মগপাড়া গ্রামের ৮ জন, চড়িয়া শিকার দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ১০ জন, গোলকপুর গ্রামের ৫ জন, কাচিয়ার গ্রামের ১ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়। বাকিদের পরিচয় এখন পর্যন্তও জানা যায়নি।

পাকিস্তানি হায়েনাদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া চড়িয়া মধ্যগ্রামের আবুল কালাম (কাঙ্গাল মণ্ডল) সারাবাংলাকে জানান, ওই দিন সকালে পাকিস্তানি হায়েনা বাহিনী আব্দুল মজিদের পুকুরের পাশে, ইয়ার আলীর পুকুরের পাশে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে গুলি চালান। ঘটনাস্থলে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। ভাগ্যের জোরে তিনি তিনটি গুলি খেয়েও বেঁচে যান। একই ঘটনায় বেঁচে আছেন আমান আলীও।

চড়িয়া জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই খাঁন বলেন, প্রতি বছর দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিলেও এ বছর করোনা মহামারির কারণে তারা সীমিত পরিসরে কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। কোরআন খতম, শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

ওই গণহত্যার ব্যাপারে মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছোহরাব আলী খান বলেন, ২৫ এপ্রিল গণহত্যায় পাটধারীর ২৯ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। এসব শহীদদের পাটধারী অন্ধপুকুর পাড়ে গণকবর দেওয়া হয়। শহীদদের স্মৃতি আগামী প্রজন্মকে জানাতে এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ খুবই জরুরি। একই দাবির পক্ষে জোরাল মতামত জানান সলঙ্গা থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হক মাস্টার।

সারাবাংলা/একেএম
বিজ্ঞাপন

আরো