একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে শেবাচিম হাসপাতালের আইসিইউ
২৩ এপ্রিল ২০২১ ১৬:৫৮ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ২০:০১
বরিশাল: মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়েই চলছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ২৪ শয্যা বিশিষ্ট দুটি আইসিইউ ওয়ার্ড। এর ফলে মহামারি করোনার সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতির সময় রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের একমাত্র অ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক ডা. নাজমুল হুদাকে।
শুধু যে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় এমনটাই নয়, দক্ষ কোনো জনবলই না থাকায় আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর মেশিনসহ এখানে যে কোন কিছুতে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। আর এসব সমস্যা নিরসনে আইসিইউ বিশেষজ্ঞসহ দক্ষ জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইসিইউ’র চিকিৎসক ডা.নাজমুল হুদা বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসক বলতে তিনিই একা। ফলে তাকেই ২৪ ঘন্টা রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, মূলত নার্সদের (সেবক/সেবিকা) ওপরই শেবাচিমের আইসিইউ নির্ভরশীল। নার্সরা ছাড়া তার কাজে এ মুহূর্তে সহযোগিতা তেমন কেউ করতে পারছেন না। এখানে কিছু প্রশিক্ষিত নার্স রয়েছে। আর কিছু নার্সকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ানসহ দক্ষ জনবলের অভাবে আইসিইউ’র পাশাপাশি আরো কিছু মেশিনের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া আইসিইউতে যান্ত্রিক কোন ত্রুটি দেখা দিলেও তা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে ঢাকায় জানাতে হয়। সেখান থেকে টেকনিশিয়ান এসে মেরামত করতেও সময় লাগছে অনেকটা।
ডা. নাজমুল হুদা বলেন, ‘নতুন করে করোনা ওয়ার্ডে আরো ১০টি আইসিইউ শয্যা চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার বেশিরভাগ যন্ত্রাংশসহ শয্যাগুলো তারা হাতে পেয়েছেন।’ তবে স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে আইসিইউ চালাতে হলে চিকিৎসকসহ সকল জনবলের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শেবাচিম হাসপাতালের পূর্বদিকের দোতলা ভবনে ২০১৭ সালে ২৩ জুলাই প্রথম আইসিইউ ওয়ার্ডের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২০ সালের মে মাসে এসে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালের পূর্বদিকের পাঁচতলা নতুন ভবনে আরো একটি আইসিইউ ওয়ার্ডের যাত্রা শুরু হয়। পুরাতন আইসিইউ ওয়ার্ডটি বর্তমানে নন কোভিড আর নতুন ভবনের আইসিইউ ওয়ার্ডটি কোভিড রোগীদের জন্য ডেডিকেটেট করে পরিচালনা করা হচ্ছে। যারমধ্যে সাধারণ অর্থাৎ নন কোভিড ও করোনা ওয়ার্ড মিলিয়ে আইসিইউ শয্যা আছে ১২টি করে মোট ২৪টি। হাসপাতালে ২৮টি ভেন্টিলেটর মেশিন রয়েছে। সম্প্রতি করোনা ওয়ার্ডের একটি ভেন্টিলেটরে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। সেটিকে পাল্টে সাধারণ রোগীদের আইসিইউ ওয়ার্ডে বাড়তি থাকা একটি ভেন্টিলেটর মেশিন করোনার ওয়ার্ডের আইসিইউতে বসানো হয়েছে। যাতে করোনার ১২টি বেডই সচল থাকে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তারা পদক্ষেপ নিবেন। বিভিন্ন সমস্যা ও সংকটের পরও যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে আইসিইউ ওয়ার্ডে রোগীদের সেবা শতভাগ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/একে