শোক ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে
২১ এপ্রিল ২০২১ ১৬:৫৩ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৩৫
ঢাকা: চিত্তপ্রিয় ঘোষ শঙ্খ বাবার চাকরিসূত্রে চাঁদপুর, পাবনা, কলকাতা ঘুরলেও পৈতৃক নিবাস বরিশালের বানারিপাড়ায়। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশুনা। বিশ্বভারতী, দিল্লি বিশ্বাবিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৯৪ এর পর থেকে অবসরেই ছিলেন। করোনা মহামারির মৃত্যুমিছিলে তিনিও সামিল হলেন। এই নিদানকালের বিজ্ঞাপনের ভেতর তাকে হারানোর শোক যেনো ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
বাংলা কবিতায় শঙ্খ ছিলেন এক ঠোঁটকাটা। অভিজ্ঞতার রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে নিখাদ এক দৃষ্টি অর্জন করেছিলেন তিনি। ত্রিশের দশকে বাংলা সাহিত্যের পঞ্চপাণ্ডবদের শেষ প্রতিনিধি তিনিই বেঁচে ছিলেন। পৃথিবীর তামাম বেদনা-শোক-আনন্দ গলায় তুলে নিয়ে কাব্যে ফুল ফোটাতেন। লেখার ভেতর দিয়ে তিনি বিস্ফোরক হয়ে উঠেছিলেন। শেষ পর্যন্ত করোনার কাছে হার মানতে হলো তাকে। ৮৯ বছর বয়সে পৃথিবীকে বিদায় জানালেন শঙ্খ ঘোষ।
তার মৃত্যুতে বাংলা ভাষার সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা জানাচ্ছে, শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে কবি জয় গোস্বামী বলছেন – এ যাত্রায় তিনি নিঃস্ব হয়ে গেলেন। আরেক বাংলা ঔপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলছেন, শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হলো তা কৃষ্ণগহ্বরে সবকিছু হারিয়ে ফেলার মতো।
এদিকে, শব্দহীনতার ভেতর দিয়ে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হচ্ছে। কবির আজন্ম নীরবতার সাধ, আর তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষকৃত্যে তোপধ্বনি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। তার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রি নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারাও শোক জানিয়েছেন।
লেখকের প্রাজ্ঞতা দিয়ে এসব কিছু আগে থেকেই আন্দাজ করেই বোধহয় কবি লিখেছিলেন,
যে মরে মরুক, অথবা জীবন
কেটে যাক শোক করে—
আমি আজ জয়ী, সবার জীবন
দিয়েছি নরক করে।
সারাবাংলা/একেএম