সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
১৮ এপ্রিল ২০২১ ২১:২৯ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ২৩:০০
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমাদের সবাইকে মিলে কোভিডকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমরা দেখেছি অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। তাদের কারণে বাসায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। কাজেই আমাদের যারা জুনিয়র আছেন তাদেরকে সচেতন করতে চাচ্ছি। আপনারা বেসামালভাবে ঘুরবেন না। বাইরে যাবেন মাস্ক পরবেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন। হাত ধুবেন, নিজে ভালো থাকবেন, নিজের প্রিয়জনকেও ভালো রাখতে পারবেন।
রোববার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল এর রোগী সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করে এ সব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তবে মন্ত্রী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানালেও অনুষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই ছিল না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি অল্প বয়সের ছেলে মেয়েরা আছেন… ১৫, ২০, ২৫ বছর তারা সবচাইতে বেশি সংক্রমিত। তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার সবচাইতে কম। তারা বাইরে ঘোরাফেরা করেছে, বেড়িয়েছে এবং তারা এসে বাসায় অন্যান্য যারা বয়ষ্ক আছে তাদেরকে সংক্রমিত করেছে। সে জন্য বয়স্কদের মাঝে সংক্রমণের হার বেশি। ৮০ ভাগ লোক মৃত্যুবরণ করেছে বয়স্করা। কাজেই আমাদেরকে যারা জুনিয়র আছেন তাদেরকে সচেতন করতে চাচ্ছি। আপনারা বেসামালভাবে ঘুরবেন না। বাইরে যাবেন মাস্ক পরবেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন। হাত ধুবেন, নিজে ভালো থাকবেন, নিজের প্রিয়জনকেও ভালো রাখতে পারবেন। প্রিয়জনের মৃত্যুর কারণ যেন আমরা না হই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
আমাদের দেশকে রক্ষা করতে হবে। রোগীদেরকে আমরা আইসিউতে দিতে চাই না। এ জন্য আমাদের সবাইকে মিলে কোভিডকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘গোটা বিশ্বের ন্যায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আমাদের দেশেও হানা দিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঢাকার সব হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা পূর্ণ হয়ে গেছে। প্রতিদিনই আইসিইউ চাহিদা বাড়ছে। এরকম একটি কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জরুরিভিত্তিতে ডিএনসিসির এ মার্কেটটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে হিসেবে চালু করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা সংখ্যা রয়েছে ১০০০টি। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ শয্যা আছে ২১২টি, এইচডিইউ শয্যা আছে ২৫০টি, কোভিড আইসোলেটেড কক্ষ আছে ৫৩৮টি। এখানে ইমার্জেন্সি শয্যা আছে ৫০টি, যার ৩০টি পুরুষ ও নারী রোগীর জন্য ২০টি । এর পাশাপাশি এখানে আরটি পিসিআর ল্যাব, প্যাথলজি, রেডিও থেরাপি সেন্টার, এক্সরেসহ অন্যান্য সুবিধাও রয়েছে।’
দেশের প্রতিটি হাসপাতালে কোভিড ডেডিকেটেড শয্যা সংখ্যা বাড়ানো ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘বর্তমানে দেশের প্রায় ১০০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আরও ৩৪টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালুর কাজ চলমান। এর ফলে বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ হাজার শয্যায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এ সব সুবিধা দেশের কোভিড রোগীদের জীবনরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখছে।’
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির বলেন, ‘আগামীকাল (সোমবার) সকাল ৮টা থেকে এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি শুরু হবে।’
মহাখালীতে অবস্থিত ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশন মার্কেটে অবস্থিত এই হাসপাতালটির বিভিন্ন ফ্লোরে এখনও আইসোলেশন ফ্যাসিলিটি নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু কোভিড রোগীর ক্রমবর্ধমান চাপে যেসব ফ্লোরগুলো প্রস্তুত সেগুলোতে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স, ৭০০ স্টাফ এবং ওষুধ, বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যবস্থা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
হাসপাতাল উদ্বোধনকালে বক্তব্য রাখেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, এফসিপিএস ডিরেক্টরেট জেনারেল মেডিকেল সার্ভিসেস মেজর জেনারেল মো. মাহাবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঞ্জুর আহমেদ, এইচইডি এর চিফ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বশির এবং ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ টি এম নাসির উদ্দিন।
সারাবাংলা/এসবি/একে