রাজধানীতে সিএনজি ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের চাপ বাড়ছে
১৭ এপ্রিল ২০২১ ১৫:৩০ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ১৮:১৩
ঢাকা: কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থদিনে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে গাড়ির বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা গেছে। ব্যক্তিগত ও কোম্পানির নিজস্ব গাড়ি ছাড়াও সড়কে চলছে সিএনজি ও রিকশা। চুক্তিতে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহনও চলছে। যাত্রী নিয়ে রাজধানীর প্রধান সড়কে চলছে পিকআপও। আর মোড়ে মোড়ে গাড়ির জন্যে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে তৈরি হয়েছে গাড়ির জটলা।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। মহাখালী, বনানী, শেওড়া, বসুন্ধরা, নাবিস্কো, সাতরাস্তা, ফার্মগেট ও শাহবাগ ঘুরে দেখা গেছে, সড়কগুলোতে লকডাউনের প্রথম দিনের চেয়ে চতুর্থ দিনে গাড়ির আধিক্য বেশি।
মহাখালীতে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে দেখা গেছে, সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির বাড়তি চাপ রয়েছে। মোটরসাইকেল ও রিকশার আধিক্যও দেখা গেছে। লকডাউনের প্রথম দিনের চেয়ে শনিবার (১৭ এপ্রিল) এই এলাকায় গাড়ি চলাচলের পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়েছে। বনানীতে দেখা গেছে, গাড়ির চাপ এখানেও বেশি। রাস্তায় মানুষের চলাচলও বেশি। মহাখালী থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার পথে বনানীতে ফুটওভার ব্রিজের নিচে গাড়ির জন্যে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
বনানীতে কথা হয় একটি কোম্পানির গাড়ি চালক অমিতের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, রাস্তায় যে পরিমান গাড়ি চলছে তাতে মনে হয় না লকডাউন। প্রথম দিনের চেয়ে রাস্তায় আজ সব ধরনের গাড়িই বেশি। সেখানে কথা হয় উত্তরার বাসিন্দা রনির সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স বা মোটরসাইকেলে চুক্তিতে উঠে যাবো। এজন্য এখানে অপেক্ষা করছি। রিকশায় গেলে ভাড়া পড়বে বেশি। তাই দাঁড়িয়ে আছি।
মহাখালীতে কথা শাহীনবাগের বাসিন্দা আতাউর রহমানের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, এই লকডাউন দেওয়ার চেয়ে না দেওয়াই ভালো। সবাই রাস্তায় বের হচ্ছে। প্রয়োজন নেই তারপরও বের হচ্ছে। পোশাক, কলকারখানা, ব্যাংকসহ সব খোলা রেখে লকডাউন হয় না। এই লকডাউনে গরিব ও দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতি হয়েছে। বহু মানুষ গ্রামে যাওয়ায় নতুন করে গ্রামেও করোনা সংক্রমের আশঙ্কা বেড়েছে।
নাবিস্কোতে কথা হয় একটি পাম্পের কর্মচারী পলাশের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রাস্তার গাড়ি দেখলে মনে হয় না লকডাউন।
ফার্মগেটে দুপুর দুইটার দিকে দেখা গেছে, এখানে গাড়ির তেমন চাপ নেই। তবে রাস্তায় প্রচুর রিকশা রয়েছে। বেশ কয়েকজন যাত্রীকে রিকশার জন্যে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
ফার্মগেটে কথা হয় যাত্রাবাড়ির বাসিন্দা জুয়েলের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে একটি ব্যবসায়িক কাজে রিকশায় করে যাত্রাবাড়ি থেকে মিরপুর গিয়েছিলাম। ভেঙে ভেঙে যেতে প্রায় চারশ টাকা ভাড়া লেগেছে। সাধারণ সময়ে সিএনজিতে গেলেও ২০০ টাকায় হয়ে যাওয়ার কথা। বাসে ৩০ থেকে ৪০ টাকা খরচ হয়। সে হিসাবে কয়েকগুণ বেশি খরচ করতে হচ্ছে। এতে আমাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে।
ফার্মগেটের রিকশা চালক শরিফ উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত (দুপুর ২টা) ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা ভাড়া হয়েছে। লকডাউন না থাকলে এই সময়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া পাওয়ার কথা। দুই আড়াই ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি কোন যাত্রী নেই। রাস্তায় ক্ষেপ (যাত্রী) নেই।
শাহবাগে কথা হয় রিকশা চালক কাশেমের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল আটটায় বের হয়েছি। এখন পর্যন্ত ( দুপুর ২টা) সাড়ে তিনশ টাকা ভাড়া মেরেছি। অন্যদিন এ সময় ছয় থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া হয়।
এদিকে, শাহবাগ, নাবিস্কো, মহাখালীসহ বিভিন্ন সড়কে সিএনজি দেখা গেছে। লকডাউনের প্রথম দিন রাস্তায় কোনো সিএনজি লক্ষ্য করা যায়নি। এছাড়া রাস্তার মোড়ে মোড়ে মোটরসাইকেল নিয়ে চালকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে তাদের চুক্তি করতেও দেখা গেছে। এছাড়া চেয়ারম্যানবাড়ি চেকপোস্টে একটি পিকআপ ভ্যানকে অন্তত ১০ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। অবশ্য এই পিকআপটিকে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক জরিমানা করতে দেখা গেছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এএম