Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাহাড়ে বৈসাবির আমেজ, উৎসবে করোনার ধাক্কা

চলন্ত চাকমা, চবি করেসপন্ডেন্ট
১০ এপ্রিল ২০২১ ১২:৫৫ | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২১ ১৪:৫৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পাহাড়ি সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি’। চৈত্র সংক্রান্তিতে বাংলা পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে এই উৎসব পালন করা হয়। প্রতিবছর এই সময়ে বৈসাবির আমেজে পাহাড়ি জনপদে, পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে ঘরে পাহাড় মুখরিত হয়ে থাকে।

আগামী সোমবার (১২ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে পাহাড়ের প্রধান এই সামাজিক উৎসব। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে জাঁকজমকভাবে হচ্ছে না এবারের বৈসাবি উৎসব। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে উৎসব পালনের প্রস্তুতি চলছে।

বিজ্ঞাপন

এই উৎসবের অন্যতম দিক হলো ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নৃত্যগীত, অতিথি আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সংস্কৃতিকে লালন ও পালন করা। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে গত বছরও বৈসাবি উৎসব ম্লান হয়ে পড়েছে । তবে এই বছর উৎসবে বাড়তি আয়োজনে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের আশা ছিল পাহাড়ের বাসিন্দাদের।

ত্রিপুরাদের ভাষায় বৈসু, মারমাদের ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু ও তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় বিষু নামে এই উৎসবকে আখ্যায়িত করা হয়। আর সম্মিলিতভাবে তাদের এই প্রাণের উৎসবকে ‘বৈসাবি’ বলা হয়ে থাকে। উৎসবের প্রথম দিন চাকমারা ফুলবিজু, দ্বিতীয় দিন মূলবিজু, তৃতীয় দিন গোজ্যেপোজ্যে দিন। মারমারা প্রথমদিন পাইংছোয়াই, দ্বিতীয় দিন সাংগ্রাইং আক্যা, তৃতীয় দিন সাংগ্রাইং আপ্যাইং। ত্রিপুরাদের প্রথম দিন হারিবৈসুক, দ্বিতীয় দিন বৈসুকমা, তৃতীয় দিন বিসিকাতাল নামে এই উৎসব পালন করে। এভাবে প্রত্যেক বছর আনন্দ-উৎসবে পালিত হয়ে আসছে উৎসবটি।

এদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে এবার বৈসাবির র‌্যালি, ফুল ভাসানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আয়োজন স্থগিত করেছে বৈসাবি উদযাপন কমিটি। তারপরেও পুরাতন বছরের বিদায় ও নববর্ষবরণের কেনাকাটা, ঘরবাড়ি সাজানো ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব পালনের প্রস্তুতি চলছে।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ করে জানা গেছে, প্রতিটি এলাকায় বৈসাবির আমেজ পেয়েছে। গত বছর করোনার কারণে বৈসাবি ম্লান হয়ে পড়েছে। তবে এবার ঘরোয়া পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে বৈসাবি উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া শহর এলাকার চেয়ে গ্রামাঞ্চলে করোনা প্রভাব নেই বললে চলে। তবে আমরা সবসময় সতর্ক।

দীঘিনালা উপজেলার ২নং বোয়ালখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও বটতলী গ্রামের কার্বারী (গ্রাম প্রধান) ধর্মসিদ্ধী চাকমা বলেন, প্রতিবছর আমরা জাঁকজমকভাবে বিজু পালন করি। কিন্তু গতবছর করোনার কারণে তেমন জাঁকজমক হয়নি। এ বছরও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তবে গ্রামাঞ্চলে করোনার প্রভাব কম। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের বিজুর প্রস্তুতি চলছে। বিজুর দিনে ছোট ছেলেমেয়েরা ঘুরবে, অন্তত তাদের জন্য হলেও বিজুর আয়োজন করতে হচ্ছে।

বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টুমণি তালুকদার সারাবাংলাকে বলেন, প্রতিবছর আমরা উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আনন্দমুখর পরিবেশে এই উৎসব পালন করি। কিন্তু করোনার প্রভাব ও সরকারি নির্দেশনায় জনসমাবেশ হবে এমন অনুষ্ঠান আমরা স্থগিত করছি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে যার অবস্থান থেকে ঘরোয়া পরিবেশে উৎসব পালনের প্রস্তুতি চলছে। তবে শহর এলাকা ও গ্রামাঞ্চল আলাদা। শহর এলাকায় ঘনবসতি ও করোনার প্রভাবও বেশি। তাই গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবের আয়োজন চলছে।

সারাবাংলা/এনএস

করোসাভাইরাস টপ নিউজ বৈসাবি উৎসব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর