পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা, সৈকতে শুধু সমুদ্রের স্বর
৬ এপ্রিল ২০২১ ০৯:১২
বরিশাল: করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আবারও দেশে সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে কুয়াকাটা সৈকত এখন পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতজুড়ে এখন শুধু সমুদ্রের স্বর। কোথাও নেই পর্যটকের কোলাহল।
সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্ব-পশ্চিমে বালিয়ারি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছে না। পর্যটক না থাকায় বন্ধ রয়েছে হোটেল-মোটেল খাবার রেস্টুরেন্টগুলো। চিরচেনা কুয়াকাটা, এখন যেন স্থানীয়দের কাছেই অচেনা লাগছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারাদেশের মতো পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে হোটেল-মোটল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। গত ১ এপ্রিল থেকে আগামী ১৫ দিনের জন্য এ আদেশ বলবৎ থাকবে।
করোনাভাইরাস থেকে সাবধান থাকার জন্য আগত পর্যটকদের নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে মাইকিং করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এরপর থেকেই পর্যটক শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। নেই কোথাও আলোকসজ্জা। মানুষ না থাকায় সন্ধ্যার পরে সৈকতে নামলে গা ছমছম করে এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ট্যুরিজম ব্যবসায়িরা জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সৈকতে মাইকিং করার পর সব ট্যুরিজম অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া তাদের ভ্রমণতরীগুলো ঘাটে বাঁধা রয়েছে।
কুয়াকাটা ইলিশপার্ক অ্যান্ড রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘প্রশাসনের নির্দেশনার পর প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টের কর্মচারীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।’
কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, ‘করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দীর্ঘ ১৫ দিন পর্যটকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় পর্যটনমুখি ব্যবসায়িরা আবারও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সৈকতে অবস্থানরত ট্যুর অপারেটরসহ স্বল্প আয়ের মানুষগুলো।’
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই আবাসিক হোটেল বন্ধ রেখেছি।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ সিনিয়র এএসপি সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সমুদ্র সৈকতসহ পুরো পর্যটন এলাকা পর্যটক ও দর্শনার্থী শূন্য রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে কুয়াকাটায় কোনো পর্যটক নেই। এখানকার হোটেল মোটেলগুলো বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত হোটেল-মোটেলে বুকিং না রাখার জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
এছাড়া স্থানীয় দোকান মালিক, পরিবহন শ্রমিক-ব্যবসায়ী ও জনগণের মধ্যে মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ লক্ষে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/এমও