Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘লোটে শেরিং শুধু ভুটানের না, তিনি বাংলাদেশেরও স্বজন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ মার্চ ২০২১ ২১:২৯ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২১ ২১:৩৫

জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে অষ্টম দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা [ছবি- পিআইডি]

ঢাকা: ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিংকে বাংলাদেশেরও স্বজন বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের সম্মানিত অতিথি ডা. লোটে শেরিং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। কাজেই তিনি শুধু ভুটানের না, তিনি বাংলাদেশেরও। আমরা তাকে সেভাবেই দেখি।

বুধবার (২৪ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

‘মুজিব চিরন্তন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যে ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার অষ্টম এই দিনের থিম ছিল ‘শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

আলোচনা পর্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে অষ্টম দিনের অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং [ছবি- পিআইডি]

অষ্টম দিনের এই অনুষ্ঠানে ভ্যাটিক্যান সিটির পোপ ফ্রান্সিস ও ভারতের কংগ্রে নেতা সোনিয়া গান্ধীর ভিডিওবার্তা প্রচার  করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আলোচনা সভা শেষে আধা ঘণ্টার বিরতি দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে উপস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজের পক্ষ থেকে এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, দেশটির জনগণ ও ভুটানের রাজার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতার দিয়ে গেছেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়— সেই পররাষ্ট্রনীতি তিনি আামদের দিয়ে গেছেন। সেই পথ বেয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ভুটান আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ট প্রতিবেশী ও বন্ধুরাষ্ট্র। ভৌগলিক নৈকট্য ছাড়াও আমাদের রয়েছে প্রায়ই একই ধরনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের অবস্থান প্রায় এক ও অভিন্ন। আমরা সবসময় একে অন্যকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে যাচ্ছি। দুই দেশের জনগণের মধ্যে যে সম্পর্ক, এটা বহু প্রাচীন। দশম শতাব্দীতে বাংলাদেশ খণ্ডে জন্মগ্রহণের সময় বৌদ্ধ ধর্মগুরু মহাসিদ্ধ তিলোপা তিব্বত-ভুটানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেন।

জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে অষ্টম দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি মুহূর্ত [ছবি- পিআইডি]

তিনি বলেন, ১৯৭১ সাল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভুটানের প্রয়াত তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক ও ভুটানের জনগণ আমাদের স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সহযোগিতা করেছিলেন। আমাদের অনেক শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে ভুটানের যুবাদের অনেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে আমাদের শরণার্থীদের সহযোগিতা করেছিল।

প্রথম দেশ হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতিও দিয়েছিল ভুটান। সে প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ভুটানই প্রথম দেশ, যারা আমাদের বাংলাদেশকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তখনো বাংলাদেশ কিন্তু চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেনি। ওই দিনটির কথা আমি কখনও ভুলতে পারি না। কারণ তখন আমরা বন্দিশিবিরে ছিলাম। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়, সেই সঙ্গে আমার মাকে গ্রেফতার করে; ওই সময় আমি, আমার ছোট বোন রেহানা, ছোট্ট রাসেল ও মাত্র পাঁচ মাস বয়সী আমার ছোট্ট জয়— আমরা সবাই কিন্তু বন্দিখানায়। সেদিন রেডিওতে প্রথম যখন আমরা শুনতে পেলাম, ভুটান আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সেটা আমাদের জন্য একটা অনন্য দিন ছিল। হাসি-কান্নার মধ্য দিয়ে সেই দিনটি আমাদের কেটেছিল। কাজেই আমরা সবসময় ভুটানের কথা স্মরণ করি।

একাত্তরে যেসব বন্ধুপ্রতিম দেশ মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তা করেছিল, তাদের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে সহযোগিতা করেছে, তাদের আমরা সম্মাননা দিয়েছি। আমরা ২০১২ সালে ভুটানের মহামান্য তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুককে ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার’ সম্মাননায় ভূষিত করেছি।

বাংলাদেশ ও ভুটানের সম্পর্ক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, পর্যটন, শিক্ষা ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। এছাড়া ভুটানের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্রসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে। আজ আমাদের সম্মানিত অতিথি ডা. লোটে শেরিংও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। তাই তাকে আমরা নিজেদের বলেই মনে করি।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

অষ্টম দিনের অনুষ্ঠান জাতীয় প্যারেড স্কয়ার টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানের প্রধানমন্ত্রী মুজিব চিরন্তন লোটে শেরিং

বিজ্ঞাপন

রিশাদ-জাহানদাদে কুপোকাত সিলেট
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২১

আরো

সম্পর্কিত খবর