Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুকুর খননে মিলল প্রাচীন নিদর্শন

কুবি করেসপন্ডেন্ট
২৪ মার্চ ২০২১ ১০:১৩ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২১ ১০:১৪

কুমিল্লা: প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান পরিচালনাকালীন সময়ে স্থানীয় জনগণ কর্তৃক পুকুর খননের সময় প্রাচীন এক কাঠের স্তম্ভ দৃশ্যমান হয়। পরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুর্শেদ রায়হান তা উদ্ধার করেন।

প্রায় ৪.৬৬ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীন স্তম্ভটি গত ১৯ মার্চ কুমিল্লা জেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রাম থেকে উদ্ধার করেন এই অধ্যাপক।

এ বিষয়ে মুর্শেদ রায়হান বলেন, কাঠের স্তম্ভটি পাওয়ার পর আমি তা সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসি। দেশের খুব কম স্থান থেকে এ ধরনের কাঠের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের আদ্র আবহাওয়ায় সাধারণত প্রাচীন কাঠের নিদর্শন টিকে থাকে না। গবেষণা করলে এ নিদর্শন থেকে এ অঞ্চলে ইট ও কাঠের সমন্বয়ে নির্মিত স্থাপত্যসহ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা সম্ভব হবে। কাঠের স্তম্ভটিতে সুন্দর কারুকার্য দৃশ্যমান।

স্তম্ভটি সংরক্ষণের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি একটি চমৎকার মিউজিয়াম অবজেক্ট এবং এটির সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। এটি সংরক্ষণ করতে দরকার হলো কেমিক্যাল প্রিজারভেশন। এ জন্য মোটা অঙ্কের ফান্ডের প্রয়োজন। আমাদের যেহেতু প্রিজারভেশন কনজারভেসন ল্যাবরেটরি আছে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোর্সের অংশ হিসেবে কাঠের কনজারভেশন শেখার সুযোগ পাবে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘর হলে সেখানে এটাকে প্রদর্শন করা যাবে। প্রায় ৪.৬৬ মিটার দীর্ঘ কাঠের এ পিলারটির জন্য যে পরিমাণ কেমিক্যাল লাগবে এর বাজার দরের ওপর নির্ভর করে বাজেট তৈরি করতে হবে। এর জন্য ফান্ডের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টা প্রশাসনকে একটা প্রজেক্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই যাতে ভালোভাবে প্রিজার্ভেশন করতে পারি।

বিজ্ঞাপন

যেহেতু এখন গ্রীষ্মকাল তাই কাঠের পানি দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে ফেটে যাওয়া রোধে এবং আদ্রতা ঠিক রাখার জন্য আপাতত এটিকে পাটের চটে মুড়িয়ে পানি দিয়ে রাখা হচ্ছে। তবে যতক্ষণ না এটাকে সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এটাকে পুনরায় মাটির নিচে রেখে জলাবদ্ধ রাখতে হবে। শীতকাল এটা সংরক্ষণের উপযুক্ত সময় বলেও জানান তিনি।

সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা এবং অসচেতনতার কারণে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি ফলে প্রত্নতত্ত্বিক স্থানগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের এ অমূল্য নিদর্শনগুলো টিকিয়ে রাখতে জনসচেতনতা এবং পদ্ধতিগত প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান প্রয়োজন। এজন্য স্থানীয় জনগণকে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে সচেতন করার বিষয়েও জোর দেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া রিসার্চ প্রজেক্টের ওপর পাঁচথুবী ইউনিয়ন নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। তার রিসার্চের নাম ‘ইনভেস্টিগেশন এন্ড এক্সপ্লোরেশন অব আর্কিওলজিকাল রিমেইন্স: এন এক্সপ্লোরাটোরি রিসার্চ ইন পাঁচথুবী এন্ড সারাউন্ডিং রিজিয়নস অব কুমিল্লা’ ।

সারাবাংলা/এনএস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় টপ নিউজ পুকুর খনন প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান প্রাচীন স্তম্ভ