মনোনয়নপত্র দিতে এসে গ্রেফতার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি
২০ মার্চ ২০২১ ০৯:৫৭
বরিশাল: হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী জামাল মৃধাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার মনোনয়ন বাছাইয়ের পর বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার জামাল মৃধা বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া গ্রামের আবুল কাসেম মৃধার ছেলে। তিনি সাজার বিষয়টি গোপন করে গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেন। শনিবার (২০ মার্চ) সকালে জামালকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা পলাশ সরদার জানান, শুক্রবার ছিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন। বিকেল পাঁচটার দিকে জানতে পারি হত্যা মামলায় জামাল মৃধার যাবজ্জীবন সাজা রয়েছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবহিত করি। এরপর নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। পাশাপাশি থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা কার্যালয়ের সামনে থেকে জামালকে গ্রেফতার করে।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান তালুকদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুই বছরের অধিক সাজা থাকলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থিতা করতে পারবেন না। দুই বছরের কম সাজা থাকলে সাজা ভোগের পর পাঁচবছর অতিবাহিত হলে ওই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। তবে জামাল মৃধা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বিষয়টি গোপন করে নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে ধান কাটা নিয়ে সংঘর্ষে বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেব পাড়ার বাসিন্দা শাহ আলম সরদার নিহত হন। এ ঘটনায় জামালসহ বাসুদেবপাড়ার ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরপরই জামাল পালিয়ে বাহরাইন চলে যান। ১৯৯৫ সালে বাহরাইন থাকাকালীন সময় বরিশালের জজ আদালত জামালসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জামাল মৃধা জানান, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় দেশে ফিরে এসে জামাল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে সাজা ভোগের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়। ওই বছরের নভেম্বর মাসে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
এরপর কয়েক দফায় আদালতে আবেদন করে জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ছিলেন। ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত তার জামিনের মেয়াদ ছিল। ওই সময় করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় তিনি জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ পাননি। পরবর্তী সময়ে তিনি আর আদালতে হাজির হননি।
গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতই তার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
সারাবাংলা/এএম