চট্টগ্রামে ২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ, মাঠে জেলা প্রশাসন
১৫ মার্চ ২০২১ ১৯:৪৮ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২১ ০০:০৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় গত দুইমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগীও আছেন। আবার উপজেলার চেয়ে নগরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার কয়েকগুণ বেশি পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ফের মাঠে নামানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন কেন্দ্রে গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার) মোট এক হাজার ৬৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে নগরীতে ১৪০ জন এবং উপজেলায় ১৩ জন পাওয়া গেছে।
নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ৯ শতাংশ। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি ১২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। নমুনা অনুযায়ী সংক্রমণের হার ছিল ১০ শতাংশ। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট ৩৬ হাজার ৩০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। এর মধ্যে নগরীর রয়েছেন ২৮ হাজার ৬১১ জন।
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট ৩৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নগরীতে ২৭৯ জন এবং উপজেলায় ১০২ জন।
চট্টগ্রামে দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগীও পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (গাইনি) জাহানারা শিখা করোনা আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জানা গেছে, তিনি দ্বিতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে। অনেকে দ্বিতীয়বারও আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকদিন ধরে চট্টগ্রামে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের মধ্যে ছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ শতাংশ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বিদেশযাত্রী বাদ দিলে এই হার প্রায় ১০ শতাংশ। এ অবস্থায় আবারও স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
সামাজিক অনুষ্ঠান, ব্যাপক জনসমাগমের এড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বী।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. আবদুর রব সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোভিড আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে অনেকের অবস্থা তুলনামূলক খারাপ। টিকা নেওয়ার পরও যে কোভিডের সংক্রমণের আশঙ্কা থাকবে না, তা নয়। সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, টিকা নেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’
এদিকে নগরীর জনসাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে সোমবার (১৫ মার্চ) নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসময় দুই হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়। ছয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যে আশরাফুল হাসান বহাদ্দারহাটে, মিজানুর রহমান আগ্রাবাদ এলাকায়, উমর ফারুক কোতয়ালি ও নিউ মার্কেট, মাসুদ রানা আন্দরকিল্লা, নুরজাহান আক্তার জিইসি মোড়, সুনিয়া আক্তার চকবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা কমেছে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানার প্রবণতাও কমেছে। এতে মানুষ আবারও কোভিডের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কোভিডের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আমরা অভিযান শুরু করেছি। গত বছরের মতো আবারও জোরালোভাবে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম