৭ মার্চের ভাষণ ইতিহাসের অংশ অস্বীকার করার উপায় নেই: ফখরুল
১৩ মার্চ ২০২১ ১৪:৩৫ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২১ ১৮:৫৯
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ একটি ইতিহাসের অংশ। এটাকে অস্বীকার করার মতো কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ফ্রি চিকিৎসাসেবা, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকেই অত্যন্ত সচেতনভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। তারা একটি মাত্র ফেয়ার বলতে চেয়েছেন পুরা স্বাধীনতার জন্য একটি পরিবার, একটি গোষ্ঠী, একটি রাজনৈতিক দল কৃতিত্বের দাবিদার। এটা সত্য নয়, এ কথা আমরা বারবার বলেছি এবং এটাকে অসত্য প্রমাণ করার চেষ্টাও করেছি। আমরা ৭ মার্চ পালন করছি। অনেকেই আমাদের ভুল বোঝার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে কথা বললেই, ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ৭ মার্চের ভাষণ ইতিহাসের একটি অংশ। এটাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
তিনি বলেন, একমাত্র ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা আসে নাই। একটা ভাষণের ফলে যুদ্ধ পরিচালিত হয় নাই। আমরা বলেছি, স্বাধীনতাকে পাওয়ার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষ, আমাদের তৎকালীণ সহকর্মীরা, ছাত্ররাজনীতি, কৃষক রাজনীতি ও শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত ছিলেন, তারা সবাই তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। এটাকে বুঝতে হবে। একতরফা হলে চলবে না। দলকানা হয়ে থাকলে চলবে না। ইতিহাস দিয়ে ইতিহাসকে মূল্যায়ন করতে হবে। সেটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে, সেজন্যই এই আয়োজন। আওয়ামী লীগ সু-পরিকল্পিতভাবে ছোট শিশুদের বই থেকে শুরু করে সমগ্র জায়গায় একটি ভ্রান্ত ইতিহাস জাতির কাছে তুলে ধরছেন। আমরা সত্য ইতিহাসটা তুলে ধরতে চাই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, তিনি প্রতিদিনই বিএনপিকে নিয়ে কমেন্ট করে কথা বলেন। তার প্রত্যেকটি কথায় একটু বিনোদন পাই, কৌতুক বোধ করি। তিনি বেশ চমৎকার করে কথা বলেন। তবে কিছুদিন আগে পত্রপত্রিকায় বাহির হয়েছে তার (ওবায়দুল কাদের) হাতে ঘড়িগুলো নাকি ৩৬ লাখ, ৫২ লাখ, এককোটি টাকা দাম ছিল। এগুলো আসলে কত দাম আমরা জানি না। তিনি গতকালের আগের দিন এবং গতকালকেও বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে কটাক্ষ করেছেন। তিনি প্রত্যেকদিন বিএনপি নিয়ে কথা বলেন। অন্যদিকে আবার বলেন বিএনপি নেই। বিএনপি নেই তাহলে প্রতিদিন কেন কথা বলেন?
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আপনাদের এলাকায় (বসুরহাট, নোয়াখালী) কি হচ্ছে? আজকে পত্রিকায় এসেছে দুইটা খুন হয়েছে। একটা সাংবাদিক, অন্যটা সম্ভাব্য রাজনৈতিক কর্মী। এরমধ্যে একজনের ভাই কাদের মির্জার বিরুদ্ধে মামলা করতে চেয়েছিলেন। পুলিশ মামলা নেইনি। তিনি শুধু কাদের মির্জা নয়, তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী ওবায়দুল কাদেরের ভাই। কোথায় আপনার সুবিচার, কোথায় গণতন্ত্র, কোথায় ন্যায়বিচার?
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপির সমালোচনা করার আগে দয়া করে আপনাদের নিজেদের ঘর সামলান।
রক্তদান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সদস্য সচিব মো. আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চিকিৎসাসেবা কমিটি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি সদস্য সচিব ডা. হারুন আল রশিদসহ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এআই/এএম