কোভিড: এবারও হচ্ছে না জব্বারের বলী খেলা
১০ মার্চ ২০২১ ১৯:৫৩ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২১ ২০:০৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এবারও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা হচ্ছে না। এবার বলী খেলার ১১২তম আসর হওয়ার কথা ছিল। শত বছরে ও বেশি সময়ের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজন হচ্ছে না।
আব্দুল জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব আমাদের দেশে আবারও বাড়ছে। এপ্রিল-মে মাসের দিকে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ থেকে আমরা এবারও বলী খেলা ও মেলার আয়োজন থেকে বিরত থাকছি। কারণ মেলায় ৫-৬ লাখ মানুষের সমাগম হবে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।’
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দোকানিরা পণ্য নিয়ে আসার জন্য এখন থেকে যোগাযোগ শুরু করায় আগেভাগে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান জহরলাল হাজারী। তিনি বলেন, ‘কমিটির সভায় আমরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবারও আমরা বলী খেলা ও মেলা করব না।’
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রামের বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর কুস্তি প্রতিযোগিতার প্রবর্তন করেছিলেন। সেটিই চট্টগ্রাম অঞ্চলে বলী খেলা নামে পরিচিত। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সনের ১২ বৈশাখ নিজ নামে লালদীঘির মাঠে এই বলী খেলার সূচনা করেন তিনি।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা গেছে, ব্যতিক্রমী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য ব্রিটিশ সরকার আবদুল জব্বারকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। তবে তিনি সেটা প্রত্যাখ্যান করেন।
ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়াও তৎকালীন মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল থেকেও বলি কিংবা কুস্তিগিররা এসে এই খেলায় অংশ নিতেন।
সূচনার ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর লালদীঘির মাঠে ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় বলী খেলা। এর একদিন আগে-পরে মিলিয়ে তিন দিন লালদিঘীর পাড়ের আশপাশের এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে মেলা।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/আরডি/টিআর