সুনামগঞ্জে শিলাবৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড কৃষকের স্বপ্ন
১০ মার্চ ২০২১ ১২:৩৯ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২১ ১২:৪০
সুনামগঞ্জ: কালবৈশাখীর আগেই শিলাবৃষ্টি জেলার শাল্লা উপজেলার বৃহৎ হাওর ছায়া ও ভেড়াডহর হাওরের বোরো ধান ও রবি শষ্য লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। শস্য উত্তোলনের মুহূর্ত ও বোরো ধানের শীষ বের হওয়ার সময় শিলাবৃষ্টিতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা।
শিলাবৃষ্টির পাশাপাশি কালবৈশাখী ঝড়ে কিছু কাঁচা বসতবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাত ৩টা ২৮ মিনিটে শুরু হওয়া ৮ থেকে ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে এই ক্ষতি হয়েছে।
আনন্দপুর গ্রামের সবজি চাষী বিকাশ চক্রবর্তী বলেন, এক একর জমিতে প্রতি বছর সবজি চাষ করে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভবান হই। গত রাতের শিলাবৃষ্টি আমার সব স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। এখন কি করে সংসার চালাব চিন্তায় আছি।
নয়াগাঁও গ্রামের কৃষক নয়ন দাস বলেন, এবার মহা বিপদে পড়েছি। ধানের চারা গুলো শুধু বেড়ে উটছে, এই সময় শিলাবৃষ্টি যে ক্ষতি করেছে, সেই ক্ষতি পুরণ করা যাবে না। এ বছর ১৪ কেদার জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছেন। সব জমির ফসলেই ক্ষতি হয়েছে। এখন কি যে করি কিছু ভাবতে পরছিনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিলাবৃষ্টিতে শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওর পাড়ের আটগাঁও, ইউপির দাউদপুর, উজানগাঁও, মামুদনগর, গঙ্গানগর, বাহাড়া ইউপির, আঙ্গারুয়া, সুখ লাইন, নোয়াগাঁও, সুলতানপুর, শাল্লাসদর, ডুমরা ,মুক্তারপুর, নাইন্দা, হরিপুর, খল্লী, বাহাড়া, ভেড়াডহর, প্রতাপুর,যাত্রাপুর, কান্দ কলা,কলাকান্দি, বাগেরহাটি,রঘুনাথপুর, হরিনগর, মন্নানপুর, ঘুঙ্গিয়ারগাঁও, শাল্লা ইউপির, নাছিরপুর, ইয়ারাবাদ, চব্বিশা, দামপুর, শান্তিপুর গ্রামসহ আশপাশের কয়েকশ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ মিনিট শিলাবৃষ্টি হয়।
শিলাবৃষ্টিতে রবিশস্য ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক-কৃষাণীরা জানিয়েছেন, অসময়ে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় সকল ফসল শেষ হয়ে গেছে। ধানের শীষ বের হওয়ার সময় শিলের চাপে ধান গাছ ভেঙ্গে মাটিতে মিশে গেছে। যেসব সমস্ত ধানের জমিতে শিলাবৃষ্টি পড়েছে সেসব জমির ফসল পাওয়া যাবে না। অসমেয় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
শাল্লা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘রবি শস্যের তেমন ক্ষতি হয়নি। কারণ অনেক কৃষক ফসল তুলেছেন। বোরো ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে আর শিলাবৃষ্টি না হলে ধান হয়ে যাবে।’
এই শিলাবৃষ্টির কারণে ধানের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ হেক্টর হতে পারে বলেও জানান মাসুদ পারভেজ।
সারাবাংলা/এনএস