Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ফাঁসির সেলের পাশের ভবনের ছাদে উঠে পালিয়েছে হাজতি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ মার্চ ২০২১ ০৮:৪৩ | আপডেট: ৯ মার্চ ২০২১ ১১:৪৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খুনের মামলার আসামি এক হাজতি ‘নিখোঁজের’ রহস্য উদঘাটন করেছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরার একটি ফুটেজে হাজতিকে কারা অভ্যন্তরে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদে দেখা গেছে। সেখান থেকে লাফিয়ে অথবা যে কোনোভাবে ওই হাজতি পালিয়ে গেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত কমিটি।

হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটি সোমবার (০৮ মার্চ) থেকে তদন্ত শুরু করে। প্রথমেই কারা অভ্যন্তরে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় হাজতি ফরহাদ হোসেন রুবেল আছেন কি না সেটা জানতে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তল্লাশি চালানো হয়।

তল্লাশির মাধ্যমে কারা অভ্যন্তরে কোথাও রুবেল না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত কমিটি।

কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) ছগির মিয়া সোমবার রাতে সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে যত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আছে সবগুলোর ঘটনার সময়ের ফুটেজ আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। একটির ফুটেজে ফাঁসির সেলের পাশে নির্মাণাধীন একটি চারতলা ভবনের ছাদে হাজতিকে দেখা গেছে।’

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, চারতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে অথবা অন্য কোনোভাবে সীমানা দেওয়ালের বাইরে গেছেন রুবেল। এক্ষেত্রে কারা প্রশাসনের কারও সহযোগিতা ছিল কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বন্দি নিখোঁজের ঘটনা তদন্তে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার ফোরকান ওয়াহিদ। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নিখোঁজ হাজতি মো. ফরহাদ হোসেন রুবেল নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মীরেরকান্দি গ্রামের শুক্কুর আলী ভাণ্ডারির ছেলে। রুবেল নগরীর সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি আগ্রাবাদের মিস্ত্রিপাড়া থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম কারাগার থেকে ‘নিখোঁজ’ খুনের আসামি

ফরহাদ হোসেন রুবেল কারাগারের পঞ্চম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন। গত শনিবার (৬ মার্চ) ভোর থেকে তাকে খুঁজে না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে নগরীর কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান।

এরপর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো.রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে শনিবার রাতে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে বলা হয়েছে, শনিবার ভোর সোয়া ৫ টা থেকে ৬ টার মধ্যে হাজতি রুবেল উধাও হয়ে যান। এরপর বিভিন্নভাবে তল্লাশি করেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ও ডেপুটি জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকে বরখাস্ত ও এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।

ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের তিন সদস্যদের কমিটির পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে। এতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার রহস্য উদঘাটন হাজতী নিখোঁজ