Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অপরাধ যাই হোক, শিশুর সাজা ১০ বছরের বেশি নয়: হাইকোর্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ মার্চ ২০২১ ২৩:২৭ | আপডেট: ৪ মার্চ ২০২১ ২৩:৩০

ঢাকা: শিশুদের অপরাধ যতই গুরুতর হোক না কেন, তাদের ১০ বছরের বেশি সাজা দেওয়া যাবে না বরে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া শিশুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কোনো শিশুকে সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না বলেও জানিয়েছেন উচ্চ আদালত।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিচারপতি মো. সওকত হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মবিনের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চের সইয়ের পর পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞাপন

রায়ে যে বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে — শিশুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার প্রক্রিয়াটি জুভেনাইল বিচার পদ্ধতির ধারণার পরিপন্থি; নিউরোসায়েন্স ও সাইকোলজিক্যাল গবেষণা অনুযায়ী শিশুরা তাদের কাজের পরিণতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল নয়; শিশুরা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, বরং ব্রেনের যে অংশ আবেগ ও যৌক্তিকতা নিয়ন্ত্রণ করে, শিশু অবস্থায় মস্তিষ্কের সেই অংশ পরিপক্ক হয় না; শিশুরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পরিণতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখে না বলে অনেক ক্ষেত্রে তারা অপরাধের দোষ নিজের ঘাড়ে চাপিয়ে নেয়; কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা পাওয়ার প্রলোভনে শিশুরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়ে যায়।

হাইকোর্ট রায়ে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্টের একটি মামলার রায় পর্যালোচনাসহ আদালত বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ আদালতের বিভিন্ন নজির আলোচনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের লিখিত আর্টিকেল, বই, সায়েন্টিফিক রিসার্চের ফল নিয়েও আলোচনা করে তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সিদ্ধান্তগুলো হলো— শিশুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কোনো সাক্ষ্যগত মূল্য নেই; স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কোনো শিশুকে সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না; এবং অপরাধ যাই হোক না কেন, কোনো শিশুকে ১০ বছরের বেশি সাজা দেওয়া যাবে না।

দেশের শিশুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধিতে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান না থাকায় শিশুদের শারীরিক ও মানসিক গঠন বিবেচনায় ১৯৭৪ সালের শিশু আইন অনুযায়ী বিচারকাজ পরিচালিত হতো। ২০১৩ সালে নতুন শিশু আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনে শিশুর বয়স, জবানবন্দি গ্রহণ, দণ্ড ও শিশু শোধনাগারসহ বিশেষ বিশেষ বিধান রাখা হয়। এ বিষয়ে দেশের উচ্চ আদালতের পক্ষে-বিপক্ষে রায় ছিল। সে কারণেই ফুল বেঞ্চ গঠনের জন্য প্রধান বিচারপতির বরাবর একটি আবেদন পাঠানো হয়েছিল।

ওই আবেদনের ধারাবাহিকতায় বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে তিন সদস্যের একটি ফুল বেঞ্চ গঠন করে দেন। আইনের জটিল ব্যাখ্যা যুক্ত থাকায় হাইকোর্টের বৃহত্তর এই বেঞ্চ সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এমআই ফারুকি ও শাহদীন মালিককে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তার জন্য অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন।

অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত নিয়ে সার্বিক বিষয়ে শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণা করলেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

টপ নিউজ শিশু অপরাধী শিশু অপরাধীর সাজা শিশুর অপরাধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর