‘আল-জাজিরা নিয়ে প্রতিক্রিয়া নেই, কিছু বলারও নেই’
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৫৩ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:০২
ঢাকা: কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় সম্প্রতি বাংলাদেশকে নিয়ে প্রচারিত তথ্যচিত্র নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আল-জাজিরা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কিছু বলারও নেই। একটি চ্যানেল কী করছে না করছে, দেশবাসী বিচার করে দেখবে। দেশের মানুষ বিচার করে দেখবে।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এরপর এক গণমাধ্যমকর্মী সম্প্রতি আল-জাজিরায় প্রচারিত তথ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শীর্ষক তথ্যচিত্র নিয়ে মন্তব্য জানতে চান প্রধানমন্ত্রীর। এর জবাবেই তিনি বলেন, তার প্রতিক্রিয়া নেই।
আরও পড়ুন:
- আইন নিজ গতিতে চলছে, চলবে: প্রধানমন্ত্রী
- ‘আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’
- ‘কারও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ তৈরি করা কাম্য নয়’
- উন্নয়নশীল বাংলাদেশ, মুজিববর্ষে অনন্য মাইলফলকে দেশ
- ‘টার্গেট’ পূরণের পর বেঁচে গেলে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধানমন্ত্রী
- নির্বাচন করবেন কি না— ২০২৪ সালে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী
- এলডিসি থেকে উত্তরণ আপামর জনসাধারণের কৃতিত্ব: প্রধানমন্ত্রী
- ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের অর্জনকে সুসংহত ও টেকসই করতে হবে’
- ‘স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণের মানদণ্ডগুলো ভালোভাবে পূরণ করেছে দেশ’
শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর খুনিদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, খুনিদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ভালো চাকরি দেওয়া হয়েছে, সংসদে বসানো হয়েছে, মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যারা এগুলো করেছে, তাদের সম্পর্কে আপনাদের ধারণা কী?— গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেই প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমি সন্তান হিসেবে যখন সরকারে এসেছি, মা-বাবার হত্যার বিচার পেয়েছি। ইনডেমনিটি বাতিল করে জাতির জনকের খুনিদের বিচার করা হয়েছে।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গও টানেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একাত্তরে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, ধর্ষণ করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, লুটপাট চালিয়েছে, জাতির পিতা তাদের বিচার শুরু করেছিলেন। তাদের মুক্ত করে মন্ত্রী-উপদেষ্টা করা হয়েছে, সরকারে জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেইসব মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত যারা, তাদের আমরা বিচার করেছি। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের বিচার হয়েছে। এই যে যাদের বিচার হয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত এসব আসামির দোসর যারা, তারা বসে থাকবে নাকি? তাদেরও তো কিছু ইন্ধন আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অদ্ভুত একটা মিথস্ক্রিয়া আছে। আল্ট্রা লেফট, আল্ট্রা রাইট— এরা সব এক হয়ে যায়। আমাদের অপরাধ কী— সেটাই প্রশ্ন।
২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিশৃঙ্খল অবস্থার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। এরপর সবকিছু সামাল দিয়ে সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কি সহজ কাজ? তারপরও করেছি। আজ এই যে স্বীকৃতি পেয়েছি, সেটি ধরে রাখতে হবে। এই অর্জন স্থায়ী করতে হবে, টেকসই করতে হবে। তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে, পরিকল্পনাও আছে। সেগুলো ঠিকঠাক করেই কাজ করব।
সরকারের সমালোচকদের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, আমাদের হত্যার চেষ্টা করেছে, দেশকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে শুধু নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত ছিল— তারা দেশের উন্নতি মানবে কিভাবে? তারা তো দেশের উন্নতি মানতে পারে না। তাদের চেষ্টা থাকে কিভাবে বাংলাদেশের বদনাম করা যায়।
তিনি বলেন, তবে আমার চিন্তার কিছু নেই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। সবকিছু মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে। কোন চ্যানেল কী বলল না বলল— সেটা শুনে রাজনীতি করা আমার কাজ না। যার যা বলার, বলতে থাকুক। বলাটাই তাদের কাজ। আর জনগণের কাজ করাটাই আমার কাজ।
সারাবাংলা/টিআর
আল-জাজিরা এলডিসি থেকে উত্তরণ টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন