Thursday 13 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরীক্ষার দাবিতে সড়ক অবরোধ, লাঠিপেটা করে সরাল পুলিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৪৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আকস্মিকভাবে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। অবরোধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে বসে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা। বেলা ১২টার দিকে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে গত বছরের মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে এ বছরের মধ্য জানুয়ারি থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু হল বন্ধ থাকায় পরীক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়ার সমস্যা নিয়ে দুর্ভোগ তৈরি হয়, যা নিয়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন।

এ প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গত সোমবার ঘোষণা দেন, ঈদুল ফিতরের পর ২৪ মে থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। তার আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনে ১৭ মে থেকে খুলে দেওয়া হবে। ২৪ মে পর্যন্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ধরনের পরীক্ষা নিতে পারবে না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠকে সাত কলেজের চলমান পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞাপন

একই প্রেক্ষাপটে বুধবার সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরাও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে পরীক্ষা চালু রাখার দাবি জানান।

বৃহস্পতিবার সকালে আবারও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এসে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সড়কে বসে পড়েন। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে নগরীর জামালখানসহ আশপাশের এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। অবরোধ শুরুর ঘন্টাখানেক পর অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। প্রথমে তাদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অবরোধে অনড় থাকলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

সড়ক অবরোধে অংশ নেওয়া সরকারি কমার্স কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র মো. আবু সাঈদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মাস্টার্স, অনার্স এবং ডিগ্রি পাস কোর্সের পরীক্ষা চলছিল। কোনো বিভাগের সব পরীক্ষা শেষে মৌখিক বাকি আছে। কিছু বিভাগে ১-২টি করে পরীক্ষা বাকি আছে। এসময় হঠাৎ করে শিক্ষামন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন পরীক্ষা স্থগিত রাখার সেটি আমরা মানতে পারছি না। সেজন্য আমরা সড়ক অবরোধ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের কোনো কথা না শুনে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। এমনকি ছাত্রীদের পর্যন্ত ধাক্কা দিয়েছে।’

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করায় তাদের পরীক্ষা যদি চালু হতে পারে, তাহলে আমরা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়ালেখা করি, আমাদের অপরাধ কী? আমাদের পরীক্ষা কেন মাঝপথে আটকে দেওয়া হবে? আমরা চাই, আগের রুটিন অনুযায়ী আমাদের পরীক্ষা শেষ হোক।’

সাঈদ জানান, সড়ক অবরোধে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, ইসলামিয়া কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব থেকে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী রাস্তা দখল করে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত করার মাধ্যমে জনদুর্ভোগ তৈরির চেষ্টা করে। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো দাবি ছিল না। করোনাকালে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সরকার ইচ্ছা করে পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিষয়টি এমন নয়। আমরা তাদের বলেছিলাম, জেলা প্রশাসক এবং সিএমপি কমিশনার স্যারের কাছে গিয়ে তাদের দাবি-দাওয়া জানাতে। কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনতে রাজি নয়। রাস্তা দখল করে রাখায় যান চলাচল স্বাভাবিক করার স্বার্থে আমরা তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

চট্টগ্রাম টপ নিউজ পুলিশ লাঠিপেটা সড়ক অবরোধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর